টানা চতুর্থবারের মতো অবরোধ শুরু হচ্ছে আজ। মাঝে শুক্রবার ও ৭ নভেম্বর বিএনপি-জামায়াতের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও লাগাতার অবরোধে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৮ অক্টোবর থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত সহিংসতা, পুলিশ হত্যা, বিস্ফোরক, বাসে আগুন ও নাশকতার আটটি বিভাগে ১৩১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গত ১৪ দিনে গ্রেফতার করা হয়েছে ১ হাজার ৮১৩ জনকে। এছাড়াও সারা দেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১৪ দিনে ৩৫০ জন আসামি গ্রেফতার করেছে। তার মধ্যে পুলিশ হত্যা মামলার আসামি ও নাশকতাসহ বিভিন্ন সময় সহিংসতার ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও রয়েছেন।
৪৮ ঘণ্টার অবরোধের কর্মসূচি ঘিরে গতকাল শনিবার ঢাকার বাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রীর চাপ দেখা গেছে। এছাড়াও রাজধানীতে গণপরিবহনের ভিড়ে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে যানজট দেখা গেছে। এছাড়াও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকা ছেড়েছেন হাজার হাজার নারী-পুরুষ। পুলিশ সদর দপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইডি-অপারেশন) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারা দেশে পুলিশ তৎপর রয়েছে। যে কোনো নাশকতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে অ্যাকশনে যাবে পুলিশ। দেশের সব মেট্রোপলিটন পুলিশ, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপারদের সজাগ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গণপরিবহনে নাশকতার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয় পুলিশ সদর দপ্তর।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, লাগাতার অবরোধের নামে গুপ্ত হামলা চালিয়ে নাশকতা ও অগ্নিসংযোগ করছে দুষ্কৃতকারীরা। গত ২৮ অক্টোবর থেকে তৃতীয় দফার অবরোধ পর্যন্ত নাশকতা চালিয়ে ৬৪টি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এমনকি অবরোধের ডাক দিয়ে আগের দিন গাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে তারা নিজেদের জানান দিচ্ছে। আমরা কঠোর আছি। জনসাধারণের জানমাল রক্ষায় প্রয়োজনে ডিএমপি আরও কঠোর হয়ে নাশকতা ও অগ্নিসংযোগ প্রতিহত করবে। এখন পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা প্রত্যেকেই নাশকতার সঙ্গে জড়িত। আগুন দেওয়ার সময় আশপাশের লোকজন ও পুলিশ হাতেনাতে ১২ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদেই উঠে আসে কারা এই নাশকতার সঙ্গে জড়িত।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নাশকতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গতকাল শনিবার ২৬ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব। গত ১৪ দিনে পুলিশ হত্যা মামলার আসামিসহ ৩৫০ জন আসামিকে গ্রেফতার করে র্যাব। আজকের অবরোধে নাশকতা প্রতিহত করতে ৪ শতাধিক র্যাবের টহল টিম দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও র্যাবের পক্ষ থেকে দূরপাল্লার গণপরিবহন ও চট্টগ্রাম থেকে পণ্যপরিবহন ও আমদানি করা সরঞ্জাম স্কর্টেও মাধ্যমে যথাস্থানে পৌঁছে দেবে র্যাব।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, জানমালের নিরাপত্তায় ও নাশকতার বিরুদ্ধে সারা দেশে পর্যাপ্ত বিজিবি টহল টিম মাঠে কাজ করছে।