বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গোটা দেশকে আন্তর্জাতিক খেলাধুলার মাঠ বানিয়েছে সরকার। আগে কোনো দেশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রকাশ্যে টুঁ শব্দ করতে পারত না। কিন্তু আজকে বাংলাদেশের যে মর্যাদা সেটি ভ‚লুণ্ঠিত হচ্ছে। শুক্রবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএব) ঢাকা জেলা শাখা।
রিজভী বলেন, আজকে শেখ হাসিনা সেন্টমার্টিন দ্বীপ দেননি বলে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না-এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এজন্য তো তিনিই দায়ী। তিনি গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছেন। জনগণ তো এখন ভোট দিতে যায় না। আর নির্বাচন কমিশন বলে যে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। আসলে জনগণ এটা বিশ্বাস করে না,কারণ তারা (নির্বাচন কমিশন) বলে চাকরি রক্ষার জন্য। এখন সরকারকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,উনি কারও কাছে মাথানত করবেন না, কাউকে পাত্তা দেন না, সেন্টমার্টিন দেন নাই বলে ক্ষমতায় না থাকার সংশয় প্রকাশ করেছেন। কেন আজকে এসব কথা হবে? তাহলে আমেরিকার সহযোগিতার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছেন কেন?
রুহুল কবির রিজভী বলেন,জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে উন্নয়নের ইন্দ্রজাল তৈরি করেছে সরকার। তাদের লোকজনই বিদেশে সাড়ে দশ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এত টাকা পাচার হয় কিভাবে? অনেকেই বলছেন পরিবর্তিত পরিস্থিতি হলে ক্ষমতাসীনদের অনেকেই ধরা পড়ে যাবে যে,এই সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা কারা সরিয়ে ফেললেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সারাজীবন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছেন। বিদেশে তার উন্নত চিকিৎসার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তার প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
রুহুল কবির রিজভী আইনজীবীদের অন্য একটি অনুষ্ঠানে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন কখনোই সম্ভব নয়। ২০০৬ সালে শেখ হাসিনা আন্দোলন শুরু করেছিলেন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কে এম হাসান যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের দায়িত্ব নিতে না পারেন সেজন্য। কারণ উনি এক সময় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন কয়েক মাসের জন্য। তাই তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না এটা নিয়ে শেখ হাসিনা আন্দোলন শুরু করলেন। সেই লগি বৈঠার আন্দোলনে লগি বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়। কিন্তু আপনি শেখ হাসিনা ৪৫ বছর ধরে আওযামী লীগের সভাপতি। বিচারপতি কে এম হাসানের অধীনে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয় তাহলে আপনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কীভাবে? কয়েক মাসের জন্য যিনি বিএনপির একটি সম্পাদক পদে ছিলেন তার অধীনে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয় তাহলে আপনি শেখ হাসিনা ভোট ডাকাতি করেছেন রাতে ভোট করেছেন তাহলে কীভাবে ওবায়দুল কাদের গ্যারান্টি দেয় আপনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? কোনোদিন এটি সম্ভব নয়। সুতরাং শেখ হাসিনার অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।