প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিকবার হামলা হয়েছে, সে জন্য তাঁর নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকেই যায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি জানান, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে দৃশ্যমান নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার পাশাপাশি অদৃশ্য ব্যাপক নিরাপত্তা বলয়ও তৈরি করা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশের কেন, পৃথিবীর এখন যারা প্রধানমন্ত্রী আছেন, সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর ওপর একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্য যাবতীয় চেষ্টার সবগুলোই করেছেন। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তার ঝুঁকির বিষয় মাথায় রেখে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
ভিভিআইপি নিরাপত্তার বিষয়ে খুব বেশি প্রকাশের সুযোগ থাকে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর একাধিকবার হামলা হয়েছে। তাই তাঁর নিরাপত্তার জন্য দৃশ্যমান নিরাপত্তার পাশাপাশি বেশ কিছু অদৃশ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। যেটি সবার জানার দরকার আছে বলে মনে করি না। সর্বোচ্চভাবে যেটি করা সম্ভব সেই ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাঙালির আবেগের জায়গা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ভেন্যুগুলো ডগ স্কোয়াড ও মাইন ডিটেক্টরের মাধ্যমে সুইপিং করা হয়েছে। পুরো এলাকা সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি করা হবে। লেকে নৌ পুলিশ ও নৌ বাহিনীর পেট্রোল টিম থাকবে। গত কয়েক দিন ধরে আশপাশের প্রতিটি আবাসিক হোটেল ও মেসে একাধিকবার নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বনানীতে যাবেন, তাই সেখানেও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’
৩২ নম্বরে ব্যাগ বা ব্যাগপ্যাক জাতীয় কিছু না নিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোড লাইনিং, রুফটপে পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। সিটিটিসিও তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। মোবাইল পেট্রোল থাকবে, মানুষজন যাতে ৩২ নম্বরে ঢোকার আগে যথাযথ নিরাপত্তা তল্লাশি হয়, সে জন্য আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। আমাদের বোম ডিসপোজাল ও সোয়াত টিম সব সময় প্রস্তুত থাকে। এখানে স্থাপিত কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং হবে। যাতে সর্বক্ষণ আমরা দেখতে পারি এবং যখন যেখানে প্রয়োজন ব্যবস্থা নিতে পারি।’
শ্রদ্ধা জানাতে আসা এবং যাওয়ার সময় নির্ধারিত রুট ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রাসেল স্কয়ারের দিক দিয়ে জনসাধারণ প্রবেশ করবেন এবং পশ্চিম দিক দিয়ে বের হয়ে যাবেন। চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যারিকেড থাকবে। নির্ধারিত রুট ম্যাপ অনুসরণ করে এলে সবাই কম সময়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে চলে যেতে পারবেন। কোভিডের ঝুঁকি চলে গেছে বলতে পারি না। যারা এখানে আসবেন অনুরোধ করব ন্যূনতম নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে যেন একটি মাস্ক পরে আসেন।’