প্রথম দুই ওয়ানডে শেষে ১-১ সমতা থাকায় স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং সফরকারী ভারতীয় দলের মধ্যকার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেটি রূপ নিয়েছে অঘোষিত ফাইনালে। শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ জিততে মুখিয়ে দুই দলই।
আজ মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে দুই দল।
ব্রিজটাউনে লো-স্কোরিং ম্যাচে প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে জয় পায় ভারত। ব্যাটারদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করতে গিয়ে ১১৫ রানের সহজ টার্গেট স্পর্শ করতেই হিমশিম খেয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। তরুণদের সুযোগ দিতে গিয়ে দলের দুই সেরা ব্যাটার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে ব্যাটিং অর্ডারে নিচের দিকে নামিয়ে আনে ভারত। শেষ পর্যন্ত সাত নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে দলের জয় নিশ্চিত করেন অধিনায়ক রোহিত। ব্যাটিং করার সুযোগ হয়নি কোহলির।
একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ওয়ানডের দল নিয়ে আরও বড় পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মাতে ভারত। রোহিত ও কোহলিকে ছাড়াই একাদশ সাজায় টিম ইন্ডিয়া। এ ম্যাচেই হেরে যায় ভারত। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৮১ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। শুভমান গিল ৩৪, সঞ্জু স্যামসন ৯, অক্ষর প্যাটেল ১, হার্ডিক পান্ডিয়া ৭, সূর্যকুমার যাদব ২৪ ও রবীন্দ্র জাদেজা ১০ রানে আউট হন। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন ওপেনার ইশান কিশান।
জবাবে ৯১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে পঞ্চম উইকেটে ১১৮ বলে অবিচ্ছিন্ন ৯১ রান তুলে সাড়ে তিন বছর পর ভারতের বিপক্ষে দলকে অবিস্মরণীয় জয়ের স্বাদ পাইয়ে দেন অধিনায়ক শাই হোপ ও কিসি কার্টি। ৬ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা আনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আগামী ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে এমন হারে চটেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা। দুই কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার ও কপিল দেব মনে করেন, রোহিত-কোহলিরা নিজেদের অনেক বড় ক্রিকেটার ভাবে। তারা মনে করে, তারা সব জানে।
কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেও বিচলিত নন ভারতের কোচ রাহুল দ্রাবিড়। তিনি বলেন, ‘অন্যদের খেলার সুযোগ দিতে চাইছি আমরা। এশিয়া কাপের আগে আমাদের হাতে দুই-তিনটি ম্যাচ রয়েছে। ইনজুরির কারণে আমাদের কয়েক জন ক্রিকেটার জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে রয়েছে। ইনজুরি কটিয়ে এখনও মাঠে ফিরেনি। এজন্য বিকল্পদের তৈরি রাখা হচ্ছে। যাতে প্রয়োজন হলে তারাও খেলতে পারে। রোহিত-কোহলিকে খেলালে দল নিয়ে অনেক উত্তরই পেতাম না। বেঞ্চের খেলোয়াড়দের প্রস্তুত করতে গেলে ফলাফলে প্রভাব পড়েই। এক্ষেত্রে চিন্তিত হওয়ার কিছুই নেই।’
অন্যদিকে বিশ্বকাপের খেলার স্বপ্ন ধুলিসাৎ হলেও, বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ভারতকে হারিয়ে উচ্ছ্বসিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় ম্যাচের জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে উল্লেখ করে হোপ, ‘সত্যি বলতে ভারতের মত শক্তিশালী দলকে হারাতে পেরে খুব ভাল লাগছে। এখন আমাদের লক্ষ্য সিরিজ জয়। আশা করছি, ছেলেরা সবাই ভাল ক্রিকেট খেলবে। আমাদের আরও ভাল পারফরম্যান্স করতে হবে।’
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের পর ভারতের বিপক্ষে জয় খরা কাটাতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবার সিরিজ জয়ের খরা কাটানোর সুযোগ ক্যারিবীয়দের। বিগত ১৭ বছর ও টানা ১২টি সিরিজে ভারতের বিপক্ষে জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।