কাতার বিশ্বকাপে নক আউট পর্বে এই প্রথম কোন ম্যাচ গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে। নির্ধারিত ৯০ মিনিট সময় শেষে ১-১ গোলে সমতায় থাকে জাপান-ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার নক আউট লড়াই। এর ফলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯ টায় আল জানুব স্টেডিয়ামে মাঠে নামে দু’দল। খেলার শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে দু’দল। তবে গোলের দেখা পায় না কেউ। ম্যাচের ৪৩ মিনিটে ডেড লক ভাঙ্গে জাপান। শেষ পর্যন্ত এক গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে জাপান। বিরতি থেকে ফিরে গোল শোধ করে ক্রোয়েশিয়া। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে নির্ধারিত ৯০ মিনিট সময় শেষে ১-১ গোলে সমতায় থাকে ম্যাচটি।
ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে জাপান ও ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচে দ্বিতীয় মিনিটেই কর্নার পায় জাপান। কর্নার নেওয়ার পর ডান দিকে বাড়ানো ক্রসে মাথা ছোঁয়ান শোগো তানিগুছি। তবে তা চলে যায় পোস্টের বাইর দিয়ে। ম্যাচের ৮ মিনিটে ডিফেন্সের ভুলে গোলের সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। ডি বক্সের ভেতর থেকে ইভান পেরিসিকের নেওয়া শট রুখে দেন জাপানের গোলরক্ষক শুইচি গোন্ডা।
ম্যাচের ১২ মিনিটে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ান জুনিয়া আইটিও। তবে সেই ক্রসে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন ইউটো নাগাটোমো। ফলে গোল পাওয়া হয় না জাপানের। ম্যাচের ১৭ মিনিটে বাম দিক থেকে ক্রস বাড়ান ইউটো নাগাটোমো। তবে তাতে মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন ডাইচি কামাডা। এরপর ম্যাচের ১৯ মিনিটে ডি বক্সের বাইর থেকে ফ্রি কিক পায় জাপান। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
ম্যাচের ২৩ মিনিটে ফ্রি কিক পায় ক্রোয়েশিয়া। মড্রিচের নেওয়া ফ্রি কিক থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন মার্সেলো ব্রোজোভিক। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে। এরপর ম্যাচের ২৫ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে গেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। এরপর আরও বেশ কিছু অ্যাটাক করে ক্রোয়েশিয়া। তবে তা জালে জড়াতে ব্যর্থ হয় তারা।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটে সাজানো আক্রমণে যায় জাপান। তবে গোলমুখে শট নিতে ব্যর্থ হয় তারা। ম্যাচের ৪০ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোলের সুযোগ পায় জাপান। ডি বক্সের ভেতর থেকে ডাইচি কামাডার নেওয়া শট অল্পের জন্য চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
তবে ম্যাচের ৪৩ মিনিটে গোলের দেখা পায় জাপান। ডান দিক থেকে আসা ক্রস থেকে বল জালে জড়ান ডাইজেন মায়েদা। তার গোলে ম্যাচে প্রথমবারের মতো লিড পায় জাপান। এরপর গোল শোধের লক্ষ্যে কিছু অ্যাটাক করে ক্রোয়েশিয়া। তবে গোল করতে ব্যর্থ হলে এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় জাপান।
বিরতি থেকে ফিরেই অ্যাটাকে যায় জাপান। ম্যাচের ৪৬ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন ডাইচি কামাডা। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। তবে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে ম্যাচে সমতা আনে ক্রোয়েশিয়া। ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ান ডেজান লাভরেন। সেখানে ডি বক্সের ভেতর থেকে অসাধারণ হেডে বল জালে জড়ান ইভান পেরিসিক। তার গোলে ম্যাচে সমতা আনে ক্রোয়েশিয়া।
ম্যাচে সমতা এনে আক্রমণের গতি বাড়ায় ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে ফের আক্রমণে যায় তারা। তবে তা ক্লিয়ার করে দেয় জাপানের ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ৬২ মিনিটে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে ভলি করেন লুকা মড্রিচ। তবে তা অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন শুইচি গোন্ডা। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে বাম দিকে থেকে আসা ক্রসে হেড করেন মারিও প্যাসালিক। তবে তা চলে যায় পোস্টের বাইর দিয়ে।
ম্যাচের ৭৭ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন ইভান পেরিসিক। তবে তা কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন শুইচি গোন্ডা। কর্নার থেকে সুযোগ তৈরী করলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের ৮০ মিনিটে সুযোগ আসে জাপানের সামনে। তবে কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
এরপর বেশ কিছু আক্রমণ করলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় দু’দল। শেষ পর্যন্ত ১-১ সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা। ফলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি।