বিদ্যা সীনহা মীম। পরাণের পর তার ক্যারিয়ার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। রিলিজ পেলো একই নির্মাতার দামাল। চলচ্চিত্র নিয়ে, নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বললেন । কথা বলেছেন তারিফ সৈয়দ
- ক্যারিয়ারে নিজের এই অভাবনীয় সফল সময়ে কেমন লাগে?
শীর্ষ সময় বা চুড়ান্ত সময় কীনা বলতে পারবো না। শুধু এটুকু জানি অবস্থান ধরে রাখাটা সবচেয়ে কঠিন। তাই এখন বুঝে শুনেই কাজগুলো হাতে নিচ্ছি। কারণ আমার দর্শকেরা যেসকল ভাল কাজের জন্য আমার উপর আস্থা রেখেছেন তাদের আশা ভঙ্গের কারণ হতে চাই না। আমি এমনিতেও অনেক কাজ করি, তা কিন্তু নয়। তবে চাই, মানসম্মত কাজ করতে। সেভাবেই নিজের ক্যারিয়ার গোছাতে কাজ করে যাচ্ছি।
চলচ্চিত্র তারকা মিশা সওদাগর একটি ইন্টারভিউতে বলেছিলেন। পরাণ’ ছবিটি মীমকে পরিপূর্ণ করেছে। ওর ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডসহ সকল সফলতা এসেছে কিন্তু ওর জন্য একটা ব্লকবাস্টার ছিল না। যার খুব প্রয়োজন ছিল মীমের। যা এই পরাণে সে পেয়েছে।
না। এটা পুরোপুরি সঠিক না। কারণ আমি কলকাতার ছবিতে জিতের সাথে কাজ করেছি। প্রসেনজিতের সাথে কাজ করেছি, এর সবগুলোই ব্যবসায়িক ভাবে দারুণ সফল। এছাড়া দেশে ‘পদ্ম পাতার জল’ ছবিটি নিয়ে আমি নানান গুনী মানুষদের প্রশংসা পেয়েছি। আসলে সাফল্য বিষয়টাই তো আপেক্ষিক। আপনি আপনার সফলতাকে কিভাবে দেখেন তার উপরে নির্ভর করে। আমি মনে করি ‘পরাণ’ আমার জন্য একটা দারুণ সুযোগ কারণ আমাদের দেশে নারীকেন্দ্রীক চলচ্চিত্র তো সেই অর্থে হয়না। সেদিক থেকে রাফি আমাকে এই সুযোগটা দিয়েছেন, এটা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার।
- পরাণ’ এর সাফল্যটা নিজের জীবনে কিভাবে ধরা দেয়। বিয়ের পরেই এই সাফল্য কিভাবে দেখছেন? আপনার স্বামী সনি নিশ্চয়ই এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত –
পরাণ’টা ভাল গল্পের ছবি। তবে এভাবে এত এত মানুষ ভালবাসা দেবে বুঝিনি। সত্যিই আমি আপ্লুত। একই সাথে নিজের কাজের প্রতি দায়বোধটাও কিন্তু বেড়ে যায়। মানুষ কিভাবে নিলো, কেন নিলো এর ব্যাখ্যায় আমি বলবো। একটা ভাল গল্পের ছবি পেয়েছে দর্শক। তাই লুফে নিয়েছে। রাফি ছবিটাও দারুণ বানিয়েছে। নিজেদের জীবনের সাথে মেলাতে পেরেছে তাই গ্রহণ করেছে। আর সনি তো এখন প্রায়ই বলে, ‘দেখছো- আমাকে বিয়ের পরই তোমার ব্লকবাস্টার হিট হলো।’ ও তো এই ক্রেডিটটা নিতে চাইবেই। আর ঈশ্বরের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞতা। আমি ভীষণ সৌভাগ্যবান।
- দামাল রিলিজ হলো। পরপর একই নির্মাতার ছবি। এই কাকতালীয় ব্যাপারটি নিয়ে কি কিছু বলার আছে —
না। কারণ ছবিগুলো পরপর একই সময়ে কাজ করা। এমন না যে, পরাণ হিট হয়েছে বলে দামালে আমাকে কাস্ট করা হয়েছে। সবগুলো প্রজেক্টই পাশাপাশি সময়ে করা। আমরা একটি টীমের মতো কাজ করেছি। আর নির্মাতা তার গল্পের প্রয়োজনে আমাকে ভেবেছে বলেই আমি কাস্ট হতে পেরেছি।
- কো-আর্টিস্টদের প্রসঙ্গে শুনতে চাই।
আমরা খুবই পারিবারিক হয়ে কাজগুলো করেছি সবসময়। আমি, রাজ , সিয়াম, রাফি সকলেই কিন্তু পরস্পর এত আন্তরিক। আমাদের সেটে কেউ না গেলে বুঝতে পারবে না যে আমরা কত মজা কওে শুটিং করি। তাই আমি বলবো একটি ছবি প্রমোশনের জন্য কো আর্টিস্টদের সাথে এমন আন্তরিকতারও খুব প্রয়োজন আছে।
রায়হান রাফি তার ফিল্ম ক্যারিয়ার শুরু করেছিল পুজা চেরীর সাথে। পূজা চেরীর সাথে আরো কিছু ছবির পরিকল্পনাও ছিল। কিন্তু তা ব্যাটে বলে হয়নি বলে নাকি মীম ইন করেছে? পূজাও সে সময় শাকিবের সাথে জুটি বাঁধায় পরবর্তীতে মীমকে নিয়েই কাজ শুরু করে। এমন মুখরোচক গল্প কি মীমের কানেও এসেছে ?
না। আর আমি শুনতেও চাই না। কারণ গল্পটাতো আমার জানার প্রয়োজনও নেই। আমার কাছে সিনেমা নিয়ে বসেছে নির্মাতা প্রযোজক। আমি গল্প শুনেছি। প্রোডাকশন প্ল্যানিং শুনেছি। এরপর একসাথে কাজ করতে রাজি হয়েছি।
- এখনকার ছবির প্রমোশনের ক্ষেত্রে নানান ধরণের কৌশল অবলম্বন করা হয়। দামালেও আপনারা ফুটবল খেললেন। কিন্তু কিছু অপ্রাসঙ্গিক কৌশলের কথা শোনা যায়। মীমের মতামত কী ?
অপ্রাসঙ্গিক তো কোনো কিছুই ভাল না। এখন আমি বা আমরা যারা ফিল্ম করি। তারা কিন্তু নিজ তাগিদে বাড়তি সময় দিয়ে একেকটি ছবির প্রমোশনের জন্য সময় দিই। একান্ত নিজস্ব ভাল লাগা থেকে। এখানে কিন্তু কোনো প্রডিউসারই আমাদের এই প্রমোশনের জন্য বাড়তি টাকা দেয় না। আমরা চলচ্চিত্র কর্মীরা নিজেদের এইসব সেক্রিফাইস গুলো করেই সামনের দিয়ে ফিল্মটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
- পরবর্তী ছবি নিয়ে কী কী পরিকল্পনা।
অনেকগুলো প্ল্যান। তবে যা কিছুই করি না কেন খুব ভেবে চিন্তেই আমার দর্শকের কথা চিন্তা করেই কাজ করবো। সবাই আমার আমাদের দামাল ছবিটার জন্য দোয়া করবেন।