রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে এক আবাসিক শিক্ষার্থীর গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা কাউকে জানালে বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরারের মতো করার (হত্যা) হুমকিও দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সামছুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মতিহার হলের ১৫৯ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।
লিখিত অভিযোগে সামছুল জানান, তিনি হলে তার রুমে মোবাইল সার্ভিসিং করেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি নিজে চলেন এবং পরিবারকে সহযোগিতা করেন। গত ১৫ আগস্ট ভাস্কর সাহা তাকে ফোন করে দেখা করতে বলেন। দেখা করলে ভাস্কর চাঁদা দাবি করে। এরপর নিয়মিত ফোন দিয়ে মানসিকভাবে টর্চার করে। শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ভুক্তভোগীকে ভাস্কর রুমে ডেকে নিয়ে যায় এবং গলায় ছুরি ধরে কাছে থাকা আনুমানিক ২০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। এসময় আরো ৬ হাজার টাকা দাবি করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাতে চাইলে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এই বিষয়টি কাউকে জানালে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে সেই অবস্থা হবে বলে হুমকি দিয়েছে। শুক্রবার রাত ১১টার মধ্যে ছয় হাজার না দিলে হল থেকে বের করে দেওয়ারও হুমকি দেয়।
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভাস্কর তার রুমে ডেকে নিয়ে বলে, তুই হলের মধ্যে মোবাইল সার্ভিসিং করিস। চা খাওয়ার জন্য টাকা দেয়া লাগবে। টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই বললে গলায় ছুরি ধরে আমার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। বিষয়টি প্রশাসন ও সাংবাদিকদের জানাতে চাইলে আমাকে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করে। আর বলে, আবরারকে দেখেছিস সেই অবস্থা কিন্তু তোরও হবে।’
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা বলেন, ‘ওর সাথে আমার সেরকম কোনো সম্পর্কই নেই। আমরা একই সেশনের বন্ধু। মারধর, টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। মারধরের আলামতও মিলেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।