তৃতীয় চার্লস আজ শনিবার (৬ মে) ব্রিটেনের রাজা হিসেবে মুকুট পরবেন। তার রাজ্যাভিষেক উপলক্ষে নানা আয়োজন করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো অভিষেকের দিন রাজার প্রতি আনুগত্যের শপথ নেওয়ার বিধান রয়েছে সব শ্রেণির মানুষের। এ নিয়ে ইতোমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে রাজা তৃতীয় চার্লস নিজেই এটি পছন্দ করতেন না। এমনই একজন হলেন ব্রিটিশ টেলিভিশন উপস্থাপক জোনাথন ডিম্বলবি, যিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
বিবিসি রেডিও ৪-এর ‘টুডে’ অনুষ্ঠানে তিনি জানান, তৃতীয় চার্লস সম্ভবত তার রাজ্যাভিষেকের সময় সর্বস্তরের মানুষের আনুগত্য ঘোষণার ধারণাটিকে ‘ঘৃণ্য’ বলে বিবেচনা করবেন। তিনি কখনোই এভাবে আনুগত্য দেখাতে চান না।
যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এর আগে কখনও অভিষেকের দিনে রাজার প্রতি আনুগত্যের শপথ নেওয়া হয়নি। এবারই প্রথম এ ধরনের ব্যবস্থা করা হলো। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবেন ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি। জাস্টিন ওয়েলবি অবশ্য এর আগে জানিয়েছিলেন, শপথ নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়।
যারা ইচ্ছুক তারা শপথ নেবেন। গত সপ্তাহে তিনি জানিয়েছিলেন, রাজার প্রতি আনুগত্যের শপথ নিয়ে কোনো নাটক হয়নি। একই সঙ্গে তিনি জানান, শপথ নেওয়া একটি আমন্ত্রণ, এটা কোনো আদেশ নয়। রাজার রাজ্যাভিষেক উপলক্ষে সম্প্রতি ল্যাম্বেথ প্রাসাদ থেকে একটি গান প্রকাশিত হয়েছিল।
সেখানেই শপথ গ্রহণের বিষয়টি জানা যায়। তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেকের বিভিন্ন ব্যবস্থার বিবরণ এই গানে রয়েছে। ল্যাম্বেথ প্রাসাদ জানিয়েছে, রাজা ও সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে গানটি তৈরি করা হয়েছে।
রাজপ্রাসাদের এক মুখপাত্র জানান, সর্বস্তরের মানুষ রাজার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তার প্রতি আনুগত্যের শপথ নেবেন। ‘রিপাবলিক’ নামে একটি সংগঠন যুক্তরাজ্যে গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য প্রচারণা চালায়। সংগঠনটি রাজার প্রতি আনুগত্যের শপথ নেওয়ার সমালোচনা করেছিল।
জোনাথন ডিম্বলবি রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তার মতে, রাজার প্রতি আনুগত্যের শপথ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। কারণ এটা আমার পরিচিত রাজার সঙ্গে যায় না।’
এ বিষয়ে রাজা কী ভাবছেন জানতে চাইলে ডিম্বলেবি জানান, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত ভাবে কিছুই জানেন না। কিন্তু একই সময়ে রাজার এই বন্ধু বলেন, ‘তিন (রাজা) এর চেয়ে অন্য কোনো কিছুকে বেশি ঘৃণ্য মনে করবেন না। তিনি কখনো চান না তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা হোক।’
ডিম্বলবি জানিয়েছিলেন, তিনি মনে করেন, আনুগত্যের শপথ গ্রহণের উদ্যোগটি আর্চবিশপের একটি ভাল পদক্ষেপ, যিনি মনে করেছিলেন যে উদ্বোধনের দিন সবাইকে রাজার প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করার সুযোগ দেওয়া ভাল ধারণা হবে।
বিবিসির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আলিম মকবুল বলেন, ‘কার মাথা থেকে এই ধারণা এসেছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। কিন্তু এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে বাকিংহাম প্যালেস রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রতি আনুগত্যের শপথ বা সর্বস্তরের মানুষের জন্য রাজ্যাভিষেক দিবসের অন্যান্য ব্যবস্থা সম্পর্কে আগে থেকে জানত না।