বয়স মাত্র ৩১ বছর। অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দলের সফল ক্রিকেটারও বটে। এছাড়া নেতৃত্ব দিয়ে দেশকেও এনে দিয়েছে দুই ফরম্যাট মিলিয়ে পাঁচ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মর্যাদা। তবে হুট করেই নিজের ক্যারিয়ারের ইতি ঘোষণা করলেন অজি অধিনায়ক মেগ ল্যানিং। গতকাল এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তবে এ সময় বিগ ব্যাশসহ ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিতই খেলা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন ল্যানিং।
বৃহস্পতিবার অবসরের বিবৃতিতে অজি নারী দলের অধিনায়ক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন ছিল। তবে আমার মনে হয়, এটিই সঠিক সময়। প্রায় ১৩ বছর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার উপভোগ করতে পেরে আমি ভাগ্যবান। তবে আমি জানি, নতুন কিছুর জন্য এগিয়ে যাওয়ার এখনই সঠিক সময়।’
তিনি আরো বলেন, ‘দলীয় সাফল্যের জন্য মূলত এই খেলাটি খেলা। আমি যা কিছু অর্জন করতে পেরেছি, তা নিয়ে গর্বিত এবং সতীর্থদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো সব সময় আমার হৃদয়ে বড় জায়গা জুড়ে থাকবে।’ এ সময় পরিবার, ক্লাব ও সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ল্যানিং বলেন, ‘আমি আমার পরিবার, সতীর্থ, ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের সমর্থনের জন্য। এছাড়া আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার জুড়ে যারা আমাকে সমর্থন করেছেন তাদের সবাইকেও আমি অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
চলতি বছরের গেল ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়া নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে খেলেছিলেন ল্যানিং। এরপর স্বাস্থ্যগত সমস্যায় পরে হলুদ জার্সি গায়ে জড়িয়ে আর মাঠে নামা হয়নি তার। পরপর তিন সিরিজ বাইরে থাকার পর হুট করেই এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরিয়ে নিলেন তিনি।
এর আগে ২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি সংস্করণ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন ল্যানিং। অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়ে মোট ২৪১টি ম্যাচ খেলেন ল্যানিং। ২০১৪ সালে নেতৃত্বের দায়িত্ব পান তিনি, এরপর অধিনায়কত্ব করেন ১৮২ ম্যাচে। তার নেতৃত্বে ২০১৪, ২০১৮, ২০২০ ও ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা জেতে অজি নারীরা। এছাড়া গেল বছর (২০২২) অস্ট্রেলিয়া নারী দলকে ওয়ানডে বিশ্বকাপও জেতান ল্যানিং। এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১০৩ ওয়ানডেতে ৫৩.৫১ গড়ে ২১টি হাফ সেঞ্চুরি ও ১৫টি সেঞ্চুরিতে ৪ হাজার ৬০২ রান করেন ল্যানিং। এই সংস্করণে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি নেই আর কারো।
এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে ১৩২ ম্যাচে ১২১ ইনিংস ব্যাটিং করে ৩৬.৬১ গড়ে তিন হাজার ৪০৫ রান করেছেন ল্যানিং। এই সংস্করণে ১৫টি হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি দুটি সেঞ্চুরিও করেন তিনি। প্রায় ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে মাত্র ছয়টি টেস্ট খেলেছেন ল্যানিং। তবে এই সংস্করণে সেঞ্চুরি নেই তার। সর্বোচ্চ খেলেছেন ৯২ রানের ইনিংস।