অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম দুই টেস্ট হেরে অ্যাশেজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে হেডিংলিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমেছিলো স্বাগতিক ইংল্যান্ড। সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হেডিংলিতে জয় ছাড়া বিকল্প পথ ছিলো না ইংলিশদের। ব্যাটার-বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে হেডিংলিতে ৩ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়ে সিরিজে ব্যবধান কমিয়ে ২-১ এ নামিয়েছে বেন স্টোকসের দল।
অ্যাশেজ জিততে হলে সিরিজের বাকি দুই টেস্টে জিততেই হবে ইংল্যান্ডকে। আর বাকি দু’টির মধ্যে একটিতে জিতলেই ২০০১ সালের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ জয়ের স্বাদ নিবে অজিরা।
এ অবস্থাতেও ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়ে কোন ‘দ্বিধা’ নেই বলে জানান ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকসের। হেডিংলি টেস্ট জয়ের পর স্টোকস বলেন, ‘আবার একটা রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ খেললাম। আমরা জিততে পেরেছি এবং আশাটা বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছি।’
স্টোকস আরও বলেন, ‘সিরিজের প্রেক্ষাপটে এটা অবশ্যই বড় কিছু। আমরা জানতাম, অ্যাশেজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হবে। এটা দারুণ জয়। প্রথম দুই ম্যাচে যদি তাকান, যতটা কাছাকাছি ছিল ম্যাচ এবার শেষ পর্যন্ত জয় পাওয়াটা মানসিকভাবে সহায়তা করবে যে, আরেকটি ম্যাচে কাছাকাছি গিয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত কাজটা সম্পন্ন করতে পেরেছি।’
এই জয়কে মাত্র ‘শুরু’ বলেও অভিহিত করেছেন স্টোকস। পরের দুই ম্যাচেও আরও ভালো পারফরম্যান্সের প্রত্যাশায় স্টোকস বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচ আমাদের পক্ষে আসেনি। যদি এমন হতো এবারও ভালো কিছু হয়নি এবং এই ম্যাচেও কাছাকাছি গিয়ে জিততে পারলাম না, তাহলে হয়তো মনে হতো, এবার আসলে হওয়ার অবস্থাই নয়। দারুণভাবে জিততে পেরে আমরা অনেক বেশি আনন্দিত। আমাদের যা করা দরকার, এটি কেবলই শুরু মাত্র।’
অ্যাশেজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমের পর কখনও সিরিজ জেতেনি ইংল্যান্ড। এবার সিরিজ জিততে পারলে ৮৭ বছর পর রেকর্ডের জন্ম দিবে ইংলিশরা।
ম্যাচে বল হাতে ৭ উইকেট ও ব্যাট হাতে ৪০ রান করে সেরা খেলোয়াড় হন প্রথম দুই টেস্টে না খেলা ইংল্যান্ডের পেসার মার্ক উড। উডের প্রশংসা করতে গিয়ে স্টোকস বলেন, ‘যখন ঘন্টায় ৯৫ মাইল গতিতে বল করা কাউকে পেয়ে যান, তখন এটি অনেক সাহায্য করে। সে এক প্রান্ত দিয়ে উইকেট নিলে, এটি খেলায় প্রভাব ফেলে। তাকে দৌঁড়াতে, দ্রুত বোলিং করতে ও হাসতে দেখতে দারুণ লাগে।’
তৃতীয় টেস্টে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় টেস্টে না খেলা উড, ক্রিস ওকস এবং মঈন আলীকে নেওয়া হয় হেডিংলিতে। এই তিনজনের পারফরমেন্সই ইংল্যান্ডের টেস্ট জয়ে অবদান রাখে। স্টোকস বলেন, ‘আমরা উডি এবং ওকসকে একাদশে ফিরিয়েছি এবং যখন এমন সিদ্বান্তগুলো ম্যাচ প্রভাব ফেলে, তখন এটি দুর্দান্ত হয়ে উঠে। খেলোয়াড়রা কেমন প্রভাব ফেলে সেদিকেই নজর দেই এবং কিভাবে সেগুলো আমরা ব্যবহার করতে পারি। এই সপ্তাহে এই তিনজনই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে।’
এদিকে তৃতীয় টেস্ট হারলেও অ্যাশেজ জয়ের ব্যাপারে এখনও আশাবাদী অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তিনি বলেন, ‘২৫০ রান কম ছিল না, আবার জয়ের মতোও ছিল না। আরও কিছু রান থাকলে তাদের উপর চাপ সৃষ্টি হতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ৯ থেকে ১০ দিনের মত সময় পেয়েছি। আমরা একটু গভীরভাবে নিশ্বাস নিবো। আর কয়েক দিনের জন্য ছুটিতে চলে যাবো। তবে সকলকেই ফিরে আসতে হবে। গ্রিনকে ম্যানচেস্টারের জন্য ফিট পাবো, জস হ্যাজেলউডও ফিরবে, আমাদের পূর্ণ শক্তির দল পাবো।’ আগামী ১৯ জুলাই ম্যানচেষ্টারে শুরু হবে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট।