বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর)। তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ১ অক্টোবর পর্যন্ত।
এবার সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাসে ৩ ঘণ্টার পরিবর্তে ২ ঘণ্টা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে এমসিকিউ ২০ মিনিট, লিখিত ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। এবার সকাল ১০টার পরিবর্তে পরীক্ষা শুরু হবে বেলা ১১টায়।
পরীক্ষার নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস এড়াতে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্র সচিবের মোবাইলে পরীক্ষার সেট কোড পৌঁছে যাবে। তিনি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না, তবে ফিচার ফোন সঙ্গে রাখতে পারবেন। তিনি ছাড়া আর কেউ পরীক্ষার কেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না।
অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ের পরে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হবে। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ১০ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ১০ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সারা দেশের ২৯ হাজার ৫১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৩ হাজার ৭৯০টি কেন্দ্রে এসএসসি, দাখিল এবং এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নেবে।
এবার কমেছে পরীক্ষার্থী : ২০২১ সালের তুলনায় এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। তবে বেড়েছে কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। এবার মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন। গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ২২ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৪ জন। সে হিসাবে পরীক্ষার্থী কমেছে ২ লাখ ২১ হাজার ৩৮৬ জন।
এবার মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৭৯০টি। গত বছর ছিল ৩ হাজার ৬৭৯টি। সে হিসাবে মোট কেন্দ্র বেড়েছে ১১১টি। এ বছর মোট প্রতিষ্ঠান ২৯ হাজার ৫৯১টি। গত বছর ছিল ২৯ হাজার ৩৫ টি। সে হিসাবে মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৫৫৬টি।
পরীক্ষার্থী কেন কমেছে, সে বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের প্রত্যেক পরীক্ষায় অনিয়মিত পরীক্ষার্থী একটা বড় সংখ্যা থাকে। গত বছর আমরা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মাত্র তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নিয়েছি। তাতে পাসের হারও অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। সে কারণে এবার অনিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা একেবারেই কম। সে কারণে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে।
গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গাজীপুরের মূল সড়কের অনেক স্থানে ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ফলে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকায় চলমান বিআরটি প্রকল্পের কাজের জন্য তিন লেনের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে সড়কে প্রায়ই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এজন্য বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ের অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশে যাত্রা করার জন্য অনুরোধ করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতো। তবে করোনা সব সূচি পাল্টে দেয়। এ বছর করোনার কারণে এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা পিছিয়েছে। গত বছর এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া গেলেও এইচএসসিতে শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয় সরকার।
প্রসঙ্গত, দেশব্যাপী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত ১৯ জুন। তবে সিলেট বিভাগসহ ময়মনসিংহ অঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ১৭ জুন এসএসসি পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা আসে।