বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতার মাটিতে একদিকে এএফসি কাপে মোহন বাগান সুপার জায়ান্ট অন্যদিকে ডুরান্ড কাপের ইমামি ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব ময়দানি লড়াইয়ে ব্যস্ত ছিল। ডুরান্ড কাপে ‘এ’ গ্রুপের শেষ খেলায় ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব ১-০ গোলে পাঞ্জাব এফসিকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলে মোহন বাগান অনিশ্চিয়তায় পড়ে যায়। সেরা রানার্সআপ হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার অপেক্ষায় মোহন বাগান। অথচ তারাই দুই ম্যাচ জিতে পয়েণ্ট টেবিলে সবার ওপরে ছিল। ইস্ট বেঙ্গল ছিল নিচে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপক্ষে ২-০ তে এগিয়ে থেকেও সেই ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র হয়। ডার্বিতে গিয়ে মোহন বাগানকে ১-০ তে উড়িয়ে দেয় ইস্ট বেঙ্গল। চার পয়েন্ট নিয়ে বুধবার শেষ ম্যাচে পাঞ্জাবকে হারিয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়।
ডুরান্ড কাপে মোহন বাগানের অনিশ্চিয়তা থাকলেও এএফসি কাপ বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচ উতরে গেছে মোহন বাগান। প্রথম রাউন্ডে নেপালের মাচিন্দ্রা এফসির বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয় পেয়েছে। ডুরান্ড কাপ নিয়ে সংশয় থাকলেও এএফসি কাপে প্রথম ম্যাচ জিতে প্লেঅফ ম্যাচে আবাহনীর অপেক্ষায় মোহন বাগান। আগামী মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় লড়াই।
কলকাতার ফুটবলে যখন ইস্ট বেঙ্গল মোহন বাগান ডার্বি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে তখনই আবাহনী নামটা সেখানে বার বার উঁকি দিয়েছে। আবাহনী মালদ্বীপের ক্লাব ঈগলসকে বিদায় করে প্লেঅফে চলে আসবে সেই বিশ্বাস ছিল বাগান কর্মকর্তাদের। মোহন বাগানও যে, নেপালের মাচিন্দ্রার বিপক্ষে জয় পাবে সেটা কলকাতার দুই এক সাংবাদিক বলাবলি করছিলেন ডার্বি ম্যাচ প্রিভিউ সংবাদ সম্মেলনে। আবাহনীকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, আবাহনী এখন কেমন, তারা কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমনকি বসুন্ধরা কিংসের বড় হয়ে উঠার গল্প আসন নিলেও আবাহনীই ছিল গুরুত্বের জায়গায়।
ডুরান্ডের ডার্বির ধাক্কা কাটিয়ে আবার উঠে এসেছে মোহন বাগান। লিগ না পাওয়া আবাহনীও এএফসি কাপ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে। মোহন বাগান পাখির চোখ করছে এএফসি কাপের মূল পর্বে। গ্রুপে লড়াই করার প্রস্তুতি। গত বার ইন্টার জোনালের সেমিফাইনালে হেরেছিল মোহন বাগান। এবার তারা এমন ভাবে দল গঠন করেছে, যেন পা পিছলে যেতে না হয়। কলকাতার ফুটবলে গুঞ্জন ৭০ কোটি টাকা বাজেট তাদের। এশিয়ার ফুটবলে মোহন বাগান নিজেদের খুঁটি গাড়তে চায়। একটি অবস্থান চায়।
আবাহনী বাধা পার হতে পারলে গ্রুপে ঢুকে যাবে। আবাহনীও সেকথাই ভাবছে। গ্রুপ পর্বের কথা বাদ দিয়ে তারা মোহন বাগানকে কীভাবে ঠেকাবে সেই ভাবনায় রয়েছে।
ডার্বিতে হেরে গেলেও কাগজে কলমে মোহন বাগানের শক্তি আবাহনীর চেয়ে অনেক বেশি। স্প্যানিশ কোচ এবং ফুটবলার, কাতার বিশ্বকাপ খেলা অস্টেলিয়ান ফুটবলার আছেন দলে। আবাহনীর সেই অর্থে বিদেশি রাখতে পারেনি। তাদের গুরুত্বপূর্ণ সব ফুটবলারই দলে ছেড়ে চলেছেন বিশেষ করে কোস্টারিকার ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস, ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল। এখন তো আবাহনীর অবস্থা বিদেশিনির্ভর। সিলেটের ম্যাচটা তুলে এনছেন বিদেশিরা। একসঙ্গে ছয় বিদেশি না নামিয়েও উপায় ছিল না। মোহামেডান, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, ফর্টিস, চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে নেওয়া হয়েছে বিদেশি ফুটবলার। আবাহনী ভাবছে নতুন মৌসুমের জন্য এখন থেকে বিদেশি রাখা যাবে না। হাতে সময় কম, এরই মধ্যে নিজেকে গুছিয়ে মোহন বাগানকে কীভাবে মোকাবিলা করবে সেটাই এখন লিগ রানার্সআপ আবাহনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।