সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি এবং উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সন্তুষ্ট না হয়ে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের আরও বন্যার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২০ জুন) মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে এই বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ নির্দেশনার কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা কেউ যাতে সন্তুষ্ট না থাকি। পানি এসে দ্রুত চলে গেছে বলে মনে করার কারণ নেই পানি আর আসবে না। ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস যেমন দেখছি, তাতে একেবারে অসম্ভব কিছু না যে, পরে আবার এ রকম হতে পারে। আসামে ম্যাসিভ বন্যা হয়েছে কিন্তু আসামের পানিটা ওইভাবে আসেনি, যেভাবে মেঘালয়ের পানিটা আসছে। ’মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে আসামের পানি এলে তোমরা রেডি থাকবা। প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সিলেট যাচ্ছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেখানে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে সবাইকে বসে কর্মপরিকল্পনা করার জন্য বলা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের এখানে যে পানি এসেছে সেটা মেঘালয় দিয়ে এসেছে। মেঘালয় দিয়ে আসার কারণে একটা স্পেসিফিক জোনে পানিটা বেশি ছিল। আসাম ও ত্রিপুরাতেও কিছু বৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু সেটার ইম্প্যাক্ট ঠিক আমাদের এখানে সেভাবে পড়েনি। ‘এবার বন্যায় যেভাবে পানি এসেছে, তাতে আগামী ৫০/৬০ বছরের মধ্যে এভাবে পানি ঢোকেনি। যে পানিটা এসেছে, সেটা ম্যানেজ করা টাফ। পানিটা এমনভাবে এসেছে যে, কাউকে সুযোগ দেয়নি। আমাদের সৌভাগ্য যে শুরু থেকেই আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করায় বড় ধরনের দুর্যোগ আমাদের হয়নি। ’মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, বন্যার কারণে চারপাশে দেয়াল দিয়ে সুনামগঞ্জ সদরের সাড়ে ৭ হাজার খাদ্য থাকা খাদ্যগুদাম রক্ষা করা হয়েছে। আর একটা গুদামে বিএডিসির সার ছিল, সেটাও আমরা রক্ষা করতে পেরেছি। আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সিলেটের বন্যায় সবচেয়ে প্রশংসা বিষয় হলো—মানুষ যে এত ধৈর্য ধরছে, এটা সবচেয়ে বড় প্রশংসার বিষয়। মানুষ কোথাও ক্ষুব্ধ হয়নি। সিদ্ধান্ত হয়েছিল প্রয়োজন হলে রাস্তাগুলো কেটে দিতে হবে, কিন্তু দেখা গেছে রাস্তার ৫-৬ ফুট উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে, তাই রাস্তা কাটার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে কৃষিমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এরপর যদি বন্যা হয়, ভাসমান বীজতলা এগুলো করার জন্য যাতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়।