এই তো কয়দিন আগেই ‘ডাবল’ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ইংলিশদেরই প্রতিবেশী আইরিশদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবানোর সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। সাকিব আল হাসানের দল পারবে সুযোগটা কাজে লাগিয়ে আইরিশদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবাতে? চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ম্যাচের ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে কে জানে! তবে সাকিবের বাংলাদেশ সফরকারী আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বপ্ন এঁকেই আজ সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচটিতে খেলতে নামছে। আর স্বপ্নটা গোপন রেখে নয়, বরং রীতিমতো ঢাক-ঢোল পিটিয়েই প্রতিপক্ষ আইরিশদের ধবলদোলাইয়ের মিশনে নামছেন অধিনায়ক সাকিব।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও একচ্ছত্র রাজত্ব করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। যদিও তিন ওয়ানডের সিরিজটা বাংলাদেশ ২-০ জিতেছে, তবে সেটা বৃষ্টি বাধার কারণে। তাছাড়া বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেন মুশফিকুর রহিমসহ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। মুশফিকের ৬০ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ডের সেই ম্যাচে বাংলাদেশ গড়ে দলীয় সর্বোচ্চ ৩৪৯ রানের পুঁজি।
ওয়ানডে সিরিজের সেই আধিপত্যের ধারা বাংলাদেশ টেনে এনেছে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। বরং প্রতি ম্যাচেই বাংলাদেশের আধিপত্য বিস্তারের পারদটা ঊর্ধ্বমুখী। পরশু সিরিজ জয় শেষে অধিনায়ক সাকিব জানিয়ে দেন, ইনিংসের প্রথম বল থেকেই মেরে খেলার কৌশল গ্রহণ করেছেন তারা। মানে আক্রমণ, আক্রমণ আর আক্রমণ—এই হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটিং নীতি। সিরিজ জেতা হয়ে গেলেও আজও এই আগ্রাসী মনোভাব নিয়েই খেলবে বাংলাদেশ।
অধিনায়ক সাকিব এখানে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের কাছ থেকে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলগুলো কখনোই আত্মতৃপ্তিতে গা এলিয়ে দেয় না। সিরিজ জিতে যাওয়ার পরের ম্যাচটিও সমান গুরুত্ব দিয়েই খেলে থাকে তারা। পরশু সিরিজ জয়ের পর সাকিবও জানিয়ে দিলেন, অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো তাদেরও লক্ষ্য ২-০ এর পর সিরিজটা ৩-০ করা, ‘অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলগুলো সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেলে ৩-০ করার কথা ভাবে। আমরাও একই কাজ করব।’ মানেটা পরিষ্কার, আজ আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করাই বাংলাদেশের একমাত্র মিশন।’
হোয়াইটওয়াশের এই মিশনে বাংলাদেশ নামবে দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনে। অধিনায়ক সাকিব নিজেই একাদশে পরিবর্তনের বার্তাটা দিয়েছেন। মানে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে থাকা জাকের আলি, রিশাদ হোসেন, শামীম পাটোয়ারী, শরিফুল ইসলামদের আজ দেখা যেতে পারে মূল একাদশে। কাকে বসিয়ে কাকে খেলানো হবে, তা নিশ্চিত না করলেও সাকিব সরাসরিই বলেছেন, ‘হতে পারে, আমরা শেষ ম্যাচটাতে নতুন কয়েক জন খেলোয়াড় খেলাব। তবে তারাও রান করার জন্য, উইকেট নেওয়ার জন্য আমাদের মতোই ক্ষুধার্ত থাকবে।’
দীর্ঘ আট বছর পর জাতীয় দলে ফেরা রনি তালুকদার দলীয় পরিকল্পনা মতোই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে চলেছেন। আইরিশদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৩৮ বলে ৬৭ রান করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেন ২৩ বলে ৪৪ রানের ইনিংস। সেই রনি অধিনায়ক সাকিবে অনুপ্রাণিত হয়ে গর্জন তুলছেন বাঘের। বলছেন, ‘আমরা বাঘের মতো খেলব। আমরা সব সময় ডমিনেট করার চেষ্টা করব। আমাদের ভয়ডর বলতে কিছু থাকবে না। সব সময় ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই মাঠে যাব।’
বোঝাই যাচ্ছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের মন্ত্র একটাই—মার, মার এবং মার। আজও এই নীতিতেই আইরিশদের পিষ্ট করতে চায় সাকিবের দল।