ইউক্রেনের দিপ্রো ১ ব্যাটালিয়নের সেনা দিমিত্রো পদভোরচানস্কি চলমান যুদ্ধে ১০ সেনা সদস্যের একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নিজ দলকে ‘যুদ্ধরত আইটি ব্যক্তি’ হিসেবেই প্রকাশ করতে বেশি পছন্দ করেন তিনি।
দিমিত্রোর দলের সদস্যরা সবাই স্বেচ্ছাসেবক। বেশির ভাগেরই যুদ্ধপূর্ব পড়ালেখা ও কাজ তথ্য-প্রযুক্তি নিয়ে।
দলের একে অন্যকে তাঁরা চেনেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই। তাঁদের এখন মূল কাজ ড্রোন পরিচালনা করা। রাশিয়ার বিভিন্ন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালান তাঁরা।
প্রযুক্তির এ যুগে যুদ্ধে ড্রোন অর্থাত্ মানববিহীন আকাশযানের (ইউএভি) ব্যবহার নতুন কিছু নয়। তবে এত বেশি মাত্রায় এগুলোর ব্যবহার ইউক্রেন যুদ্ধেই প্রথম হচ্ছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই পক্ষই এই হাতিয়ার ব্যবহার করছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ের কাছেই বড় মাপের সামরিক ড্রোন রয়েছে। এগুলো একদিক থেকে যেমন দামি, অন্যদিক থেকে তেমন ধ্বংস করা কঠিন। আবার একটি ধ্বংস হয়ে গেলে আরেকটি জোগাড় করাটাও কিছুটা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। ফলে দুই পক্ষই যুদ্ধের ময়দানের জন্য বেছে নিয়েছে বাণিজ্যিক ড্রোনকে। এগুলো দামেও তুলনায় সস্তা এবং সহজেই আরেকটি জোগাড় করা যায়।
দুই পক্ষ থেকেই শত্রুপক্ষের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। সে অবস্থান অনুসারে গোলাবর্ষণ করা হয়। তবে ছোট ড্রোনগুলোর সঙ্গে বিস্ফোরকও পাঠানো যায়।
বাণিজ্যিক ড্রোনগুলোর আকারভেদে বিভিন্ন রকম ধারণক্ষমতা। দিমিত্রো ও তাঁর সঙ্গীরা নিজেদের ঘাঁটিতে থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহার করে পাখাসদৃশ সরঞ্জাম তৈরি করেন। এটি উড়ন্ত বোমাকে নিজ লক্ষ্যের দিকে ভেসে এগিয়ে যেতে সহায়তা করে।
তবে শুধু ড্রোনের মধ্যে নিজেদের সীমিত রাখেননি দিমিত্রিরা। ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স ও আড়িপাতা নিয়ে পড়ালেখা করতে হচ্ছে তাঁদের।
ড্রোন পরিচালনার সময় দুই পক্ষকেই সাবধান থাকতে হচ্ছে। একে অন্যের ড্রোন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলে তারা। তবে সমস্যা হলো, আওয়াজ শুনে অনেক সময়ই বুঝে ফেলা যায় ড্রোন আসছে।
যুদ্ধের শুরুতে নিজেদের ড্রোন শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম দিয়ে রিয়েল টাইমে ইউএভি যোগাযোগ শনাক্ত করত রাশিয়া। দ্রুত বের করে ফেলতে পারত প্রতিপক্ষের ড্রোন ও সেটির পাইলটের অবস্থান।
দিমিত্রোর দল বলছে, তারা ওই ব্যবস্থাটিকে ব্লক করার উপায় বের করেছে। অন্যদিকে রাশিয়াও হাত গুটিয়ে বসে নেই। বৈদ্যুতিন যুদ্ধকৌশলে পারদর্শী এ দলটি ইউক্রেনের সামরিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে মাঝে মাঝে জ্যাম করে দিচ্ছে।