ইরানে হিজাব আইন লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতার হওয়ার পর হেফাজতে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় চলমান বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। ওসলোভিত্তিক একটি এনজিও বৃহস্পতিবার নিহতের এই সংখ্যা জানিয়েছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।
হিজাব আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাশা আমিনিকে আটক করে। পুলিশের হেফাজতে অজ্ঞান হয়ে তিন দিন কোমায় থাকার পর শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নৈতিকতা পুলিশ যখন তাকে তেহরানে গ্রেফতার করে তখন সঙ্গে ছিলেন তার ভাই। আমিনির বিরুদ্ধে হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, হঠাৎ করে আমিনির হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যায়।
যদিও তার পরিবারের দাবি, তিনি সুস্থ ও সবল ছিলেন।
ছয় দিনের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা উল্লেখ করে ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, মৌলিক অধিকার ও মানবিক সম্মান ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গুলির প্রতিবাদে ইরানের জনগণ রাজপথে নেমে এসেছেন।
সংস্থাটি বলছে, ৩০টি নগর ও শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে বিক্ষোভকারী ও সামাজিক অ্যাক্টিভিস্টদের গণগ্রেফতারের আশঙ্কা বাড়ছে।
আইএইচআর বলছে, বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে বুধবার রাতে নিহত হয়েছে ১১ জন। মাজানদারান প্রদেশের আমোল শহরে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। একই প্রদেশের বাবোল শহরে নিহত হয়েছেন আরও ছয় জন। এছাড়া তাবরিজ শহরে আরেকজন নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। এর আগে একটি কুর্দি মানবাধিকার সংস্থা বলেছিল, কুর্দিস্তান প্রদেশ ও কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলে ১৫ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বুধবার রাতেই নিহত হয়েছেন ৮জন।
ইরানের কঠোর পোশাকবিধি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করে নৈতিকতা পুলিশ। ইরানের পোশাকবিধি অনুসারে নারীদের প্রকাশ্যে মাথায় হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। দেশটিতে নারীদের আঁটসাঁট ট্রাউজার, ছেঁড়া জিন্স, হাঁটু দেখা যায় এমন পোশাক এবং উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরা নিষিদ্ধ।