সাধারণভাবে প্রতিবছর ঈদের আগে রেমিট্যান্স বেড়ে থাকে। তবে এবার কমেছে। গত জুন মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা ১৮৪ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। আগের মাস ও গত বছরের একই মাসের তুলনায় যা কম। মূলত হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালে বেশি অর্থ পাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমার ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট দুই হাজার ১০৩ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। আর ২০২০-২১ অর্থবছর এসেছিল দুই হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার। এর মানে গত অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে ৩৭৫ কোটি ডলার বা ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ।
২০২১ সালের জুন মাসে প্রবাসীরা ১৯৪ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছিলেন। এ হিসেবে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে ১০ কোটি ডলার যা ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর গত মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৯ কোটি ডলার। আগের মাসের তুলনায় কমেছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠিয়ে বেশি পাচ্ছেন ১২ থেকে ১৪ টাকা। তবে হুন্ডিতে পাঠালে পাচ্ছেন আরও বেশি। বর্তমানে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে ৯৮ টাকা পর্যন্ত মিলছে। এর সঙ্গে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। তবে প্রতি একশ’ ডলারে গড়ে ৪ শতাংশ খরচ হয়। ফলে প্রকৃতপক্ষে এখানকার সুবিধাভোগী পান ৯৬ টাকার মতো। তবে হুন্ডিতে পাঠালে হাতে পাচ্ছেন ৯৮ থেকে ১০০ টাকা। এর বিপরীতে কোনো খরচ নেই। বরং হুন্ডি কারবারীরা বিদেশে প্রবাসীর কর্মস্থল থেকে অর্থ নিয়ে এখানকার সুবিধাভোগীর হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন।
ব্যাংকাররা জানান, করোনা পরবর্তী পাচার বৃদ্ধির ফলে হুন্ডিতে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে গত অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স কমতির দিকে ছিল। তবে অর্থবছরের শুরুতে যতোটা কম ছিল সে তুলনায় শেষ দিকে এসে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এর মধ্যে আমদানিতে ৪১ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে।
বাজারের চাহিদা মেটাতে গত অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। যে কারণে ৩০ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৪১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। গত আগস্টে রিজার্ভ যেখানে উঠেছিল ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে। আর গত বছরের জুনে ছিল ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার।