উন্নয়নের নামে হরিলুট করে দেশকে ফোকলা করে দেওয়া হয়েছে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, সবকিছু শেষ করে সরকারপ্রধান এখন জনগণকে সঞ্চয়ী হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয় উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এবারের ঈদে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দেশবাসীকে। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মাঝেমধ্যে গণমাধ্যমের সামনে এসে বিএনপিকে নিয়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেন। কিন্তু ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
ঈদের সময় জনগণকে এক শ টাকার ভাড়া পাঁচ শ টাকা গুনতে হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এ সময় সড়কে দুর্ভোগের সীমা ছিল না। পাঁচ ঘণ্টার পথ ৩০ থেকে ৩২ ঘণ্টায়ও শেষ হয়নি। যাত্রীদের দিন–রাত কাটাতে হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে। অনেকের ঈদ করতে হয়েছে রাস্তায়। কেউ কেউ ঈদের দিন দুপুরে বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন। অথচ মন্ত্রীরা বলছেন, মহাসড়কে কোনো যানজট নেই। সড়কপথে এ দুর্ভোগের জন্য আওয়ামী প্রশাসন ও সড়কমন্ত্রীকে দায়ী করেন রিজভী।
শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কায় একটি পরিবার ক্ষমতায় থেকে উন্নয়নের নামে দেশটিকে বিপজ্জনক খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছিল। এখন প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাদের। বাংলাদেশেও বেশ কয়েক বছর ধরে কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, যা মূলত একটি পরিবারের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ কোনো অংশগ্রহণ করতে পারেননি। অথচ তারা লুটপাট করে যাচ্ছে, অর্থ পাচার করছে…।
রিজভী বলেন, উন্নয়নের নামে হরিলুট করে দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করে দেশকে ফোকলা করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে জ্বালানি প্রয়োজন, তা একেবারে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর গ্যাস উত্তোলন না করে আমদানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। এখন কয়লা, গ্যাসসহ জ্বালানি–সংকটে দেশে বিদ্যুৎ–সংকট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে সবকিছু লুটপাট করে সব টাকা সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন বিদেশি ব্যাংকে পাচার করার পর সরকারপ্রধান এখন জনগণকে সঞ্চয়ী হওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। এসব করে তারা প্রতিনিয়ত লোক হাসানোর পাত্র হচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের জাহিদুল কবির প্রমুখ।