যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বের ৮টি স্টেট এর প্রায় ১ লাখ বাঙ্গালীর দূতাবাস সেবা সহজ করার জন্য ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ফ্লোরিডার মায়ামীতে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ‘কন্সুলেট জেনারেল’ ফ্লোরিডা শাখা।
বহুদিন অনেক প্রবাসীর প্রচেষ্টার পরে সরকার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরে নিতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেণ দেশের এই এলাকায় ৮টা স্টেট (আলাবামা, আরকান্সাস, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, লুইজিয়ানা, মিসিসিপি, দক্ষিণ ক্যারলিনা এবং টেনেসি) এর জন্য কন্সল অফিস প্রতিষ্ঠা করবে। কন্তু সেটা কোথায় থাকা উচিত? অনুসন্ধান পর্ব কাটিয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয় ফ্লোরিডায় অন্যান দেশের কনসুলেট অফিসের এলাকাতেই প্রতিষ্ঠিত করাই যুক্তিযুক্ত।
অফিসতো ঠিক হলো কিন্তু কনসাল জেনারেল কে হবেন? নতুন এলাকায় নতুন অফিস অভিজ্ঞ অফিসার না হলেতো ভালো সার্ভিস দেয়া যাবে না। আর যদি সার্ভিস মানসম্পন্য না হয় তবেতো আসল কাজই সম্পন্য হবে না।
অনেক যাচাই-বাচাইয়ের পরে নির্বাচিত হন জাতীসংঘের বাংলাদেশ মিশনের সাবেক প্রথম সচিব ও ইতালির মিলানে নিয়োজিত কৃতী কনসাল জেনারেল জনাব ইকবাল আহমেদ।
শুরু হলো ২১তম ব্যাচে সিভিল সার্ভিসে যুক্ত হওয়া কৌশলী কূটনীতিক ইকবাল আহমেদ এক নতুন চ্যালেন্স, শুরু করলেন নতুন সহকর্মীদের নিয়ে এক কর্ম যজ্ঞ। নতুন পরিবেশে নিজেদের মার্জ করে দিলেন কর্ম পাগল জনাব আহমেদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং-এ বি.কম এবং এম.কম। আইবিএ থেকে এমবিএ সম্পন্ন করে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। এর পরে ফরাসি সরকারের স্কলারশিপ পেয়ে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে স্নাতকোত্তর ডিপ্লমা কৃতিত্বের সাথে অর্জন করেছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দফতরে জাতিসংঘ বহুপাক্ষিক অর্থনৈতিক বিষয়, সার্ক ও বিমসটেক শাখাসহ ফরেন সার্ভিস একাডেমির পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
সরকারের ক্রিটিক্যাল নিয়মের করিডোরে নিজেকে আটকে না রেখে সরকারের সেবা সবার দরজায় নিয়ে কীভাবে সরকারকে মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিতে হয় তা দেখিয়ে দিতে গিয়ে কন্সল জেনারেল এর খোলস থেকে বেরিয়ে হয়ে গেলেন সবার প্রিয় ‘ইকবাল ভাই’।
ফ্লোরিডাসহ আশেপাশের ৮টি রাজ্যের প্রবাসি বাঙ্গালীদের প্রিয় ইকবাল ভাই সেবা নিয়ে অফিসে বসে না থেকে সরকারি সেবাকে উৎসবে পরিনত করে তার দায়বদ্ধ স্টেটগুলোতে অফিস নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেবা প্রদানে সিদ্ধহস্ত, ভ্রমণপ্রিয় ইকবাল ভাই।
বাঙ্গালী কমিউনিটির একজন নেতৃস্থানীয় সংগঠক ‘মিল্টন মজুমদার’ বলেছেন “যেহেতু কনসল জেনারেল এর অফিস দেশের একেবারে শেষ প্রান্তে সেহেতু তাদের পরিধির মধ্যে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে সেবা দিচ্ছে, এটা খুবই ভালো উদ্দ্যোগ। এর ফলে সব রকম প্রাথমিক সেবা আমরা খুব সহজেই গ্রহণ করতে পারি, আর আমাদের সবার প্রিয় “ইকবাল ভাই” এখানে না থাকলে হয়তো এই সেবা আমাদের জন্য এমন সহজলভ্য হতো না, আমাদের দোরগোড়ায় সেবা নিয়ে আসার জন্য তাকে ধন্যবাদ। আমরা চাই ‘ইকবাল ভাই’ আরও অনেক দিন আমাদের মাঝে থাকুক।”
আমাদের ইকবাল ভাই স্বপ্ন দেখেন একদিন তিনি বছরে একটা নির্দিষ্ট সময় প্রতিটা স্টেটে কনসল সেবা নিয়ে যাবেন। মানুষ সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির মুখমুখি হবে না, সেবাই মানুষকে খুঁজে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিবে।
একজন সরকারী কর্মকরতা যেমন হওয়া উচিত, তার যে সব গুনাবলি থাকা দরকার, তেমন সব রকম গুনের অধিকারী তিনি। মানুষ তাদের থেকে যেমন সার্ভিস প্রত্যাশা করে তেমন সার্ভিস প্রভাইড করেই তিনি হয়েছেন প্রিয় ‘ইকবাল ভাই’।
আমাদের প্রত্যাশা ইকবাল ভাই এমন ভাবেই জীবনটা কাটাবেন।