আজ শনিবার থেকে ভারতের দিল্লিতে জি২০ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনসহ বিশ্বের প্রভাবশালী দেশের নেতারা হাজির হয়েছেন। যদিও এতে এবার অংশ নেন নি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। তবে তার পরিবর্তে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং হাজির হচ্ছেন। এছাড়া এবারে আরেক শক্তিধর দেশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নেই।
এবারের জি ২০ সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন তবে এতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তবে এবারের সম্মেলন নয়ে অনেক সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এ জোটের।
এবারের জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন-২০২৩ যে থিমের অধীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তা হলো বসুধৈব কুটুম্বকম (এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ)। মানুষ, প্রাণী, উদ্ভিদ ও অণুজীবসহ সব জীবনের মূল্য ও পৃথিবী ও বিস্তৃত গ্রহে তাদের আন্তঃসম্পর্ককে কেন্দ্র করে এজেন্ডটি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এবারের জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্যগুলি পূরণ করতে দেশগুলিকে বিভিন্ন পরিবর্তনের পথ অনুসরণ করতে হতে পারে। দুর্বল অর্থনীতিকে সমর্থন করার জন্য আরও আর্থিক সংস্থান প্রয়োজন,গ্রহটিকে রক্ষা করার সময় তাদের জনসংখ্যাকে দারিদ্র্য থেকে তুলে আনতে হবে।নেট-শূন্য গ্রীনহাউস-গ্যাস নির্গমন অর্জন থেকে শুরু করে বৈষম্য কমানো পর্যন্ত আজকের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে ব্যক্তিগত পুঁজির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
এই বছরও জলবায়ু অর্থায়নের জন্য আমাদের ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষে পৌঁছানোর একটি ভাল সম্ভাবনা রয়েছে।আমরা এই লক্ষ্যটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করব এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলি তাদের ন্যায্য অংশে নেবার চেষ্টা করবে। এছাড়াও নিম্ন-আয়ের দেশগুলির জন্য ঋণ পুনর্গঠন সমন্বয় প্রক্রিয়ার সময়োপযোগীতা করতে হবে। এটি নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে তা প্রসারিত করার বিষয়ে আলোচনা করা উচিৎ। ইতিমধ্যেই চাদ এবং জাম্বিয়ার জন্য সরবরাহ করেছে কমন ফ্রেমওয়ার্ক।এটি অন্য কোথাও ব্যবহার করা যেতে পারে এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সেখানে আরও বলা হয়, এই জোটের দেশগুলিকে একে অপরকে সমর্থন করতে হবে। যা তাদের স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করার জন্য প্রয়োজন।
সম্প্রতি জি২০ ভুক্ত দেশগুলোর আলোচনার পরিসর বেড়েছে। তাদের আলোচ্য সূচি শুধু অর্থনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জলবায়ু পরিবর্তন,টেকসই জ্বালানি,আন্তর্জাতিক ঋণ মওকুফ এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর করদানের মতো বিষয়ও আলোচনায় স্থান করে নিয়েছে।
প্রতি বছর জি২০ ভুক্ত কোন একটি দেশ সভাপতির দায়িত্ব নেয় এবং সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় ঠিক করে। ২০২২ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিল ইন্দোনেশিয়া এবং জি২০ নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল বালিতে।২০২৩ সালের সভাপতি হিসেবে ভারত চায় দিল্লির এই সম্মেলন যাতে টেকসই উন্নয়নের প্রতি মনোনিবেশ করে এবং উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যাতে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে সে বিষয়ে পদক্ষেপ আসুক।
এই সম্মেলনে জোটবদ্ধ আলোচনার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সুযোগ রাখা হয়েছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং দারিদ্র নিরসনে বিশ্বব্যাংকের মতো বৈশ্বিক সংস্থার আরো বেশি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে দেশগুলোর সাথে আলোচনা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ক্রেমলিন অবশ্য জানিয়েছে যে,রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সম্মেলনে অংশ নেবেন না।এছাড়া চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংও যে সম্মেলন থেকে দূরে থাকবেন সেটিও সংবাদ মাধ্যমে বিস্তরভাবে প্রচার করা হয়েছে।