ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন,ক্রিমিয়ার মাধ্যমেই ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং ক্রিমিয়ার মুক্তির মধ্য দিয়েই এই যুদ্ধ শেষ হবে।
রুশ দখলে থাকা ক্রিমিয়ার একটি বিমান ঘাঁটিতে মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি বড় বিস্ফোরণ হয়।এতে এক বেসামরিক নিহত হয়।ওই বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরই জেলেনস্কি এই মন্তব্য করেন।বুধবার এই খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি অনলাইন।
বিস্ফোরণের বিষয়টি জেলেনস্কি বক্তব্যে উল্লেখ করেননি।তবে গতকাল রাতে তিনি ক্রিমিয়া উপদ্বীপ নিয়েই অনেক কথা বলেন। তিনি বলেন,ক্রিমিয়া ইউক্রেনের এবং আমরা এটি ছাড়বো না।
রাশিয়া এই বিস্ফোরণের ব্যাপারে তেমন উচ্চবাচ্য করছে না।তারা বলছে গোলাবারুদ রাখার স্থানে বিস্ফোরণ হয়েছে।তবে তা কোনো হামলার কারণে হয়নি এবং এতে ক্ষয়ক্ষতিও তেমন হয়নি।অন্যদিকে ইউক্রেনের শীর্ষ এক উপদেষ্টা এই বিস্ফোরণের দায় অস্বীকার করেছেন।
কাগজে কলমে ক্রিমিয়া ইউক্রেনের অংশ।কিন্তু ২০১৪ সালে একটি গণভোটের পর রাশিয়া এই উপদ্বীপ দখল করে নেয়।তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ওই গণভোটকে অবৈধ হিসেবে বিবেচনা করে।অনেক ইউক্রেনীয় মনে করেন ক্রিমিয়া দখলের মধ্য দিয়েই রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
জেলেনস্কিও সেই কথাই বললেন গতকাল। তিনি বলেন,আমরা ভুলে যাব না ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ক্রিমিয়া দখলের মধ্য দিয়ে।এই রাশিয়ান যুদ্ধ ক্রিমিয়ার মধ্য দিয়ে শুরু এবং অবশ্যই ক্রিমিয়ার মুক্তির মধ্য দিয়েই শেষ হবে।
জেলেনস্কির সর্বশেষ এই মন্তব্য এটাই ইঙ্গিত করে যে,তিনি বিশ্বাস করেন ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে ক্রিমিয়া পুনরায় নিজেদের করে নিতে পারবে ইউক্রেন। তবে অতীতে তিনি এই ইস্যুতে ভিন্ন কথা বলেছিলেন।
অতীতে তিনি ইঙ্গিত করেছিলেন, রাশিয়া যদি ২৪ ফেব্রুয়ারির পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় তাহলে ইউক্রেন শান্তি মেনে নিতে পারে।অর্থাৎ পুনরায় ক্রিমিয়ার দখল নেওয়া তাদের কোনো দাবি বিবেচিত হবে না।
মঙ্গলবার পশ্চিম ক্রিমিয়ার নোভোফেদোরিভকা স্যাকি সামরিক ঘাঁটির কাছে কয়েক দফা বিস্ফোরণ ঘটে।সমুদ্র সৈকতের কাছাকাছি এই এলাকাটি রাশিয়ান পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়,বিস্ফোরণের সময় সৈকতে আসা লোকজন দৌড়াচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন,তারা অন্তত ১২টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার নিয়োগকৃত স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে,বিস্ফোরণে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত,চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।