ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও প্রযোজক বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহেল রানার চোখের ভুল চিকিৎসার কারণে তার অন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবস্থার চরম অবনতি ঘটলে মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৩০ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসা শেষে গত শুক্রবার সকালে দেশে ফিরেছেন তিনি। দেশে ফিরেই নিজের ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করে লেখেন, ‘চোখের জটিল অপারেশনের পর ভালো হয়ে দেশে ফিরে দারুণ লাগছে।’ সোহেল রানা বলেন, ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে আমার চোখের ভুল চিকিৎসা হয়েছে। সময়মতো সিঙ্গাপুর না গেলে অন্ধ হয়ে যেতাম।
তিনি বললেন, ‘চোখের ভুল চিকিৎসা করায় এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদের বিরুদ্ধে কথা না বললে তারা আরো মাথায় উঠে যাবে।’ তার প্রশ্ন, মানুষ নিরুপায় হয়ে ডাক্তারের কাছে যায়। সেই ডাক্তার যদি এমন হয়, তাহলে মানুষ কোথায় যাবে? এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, আমি শিল্পী সমাজকেও বিষয়টি জানিয়েছি।
সোহেল রানা বলেন, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে কাগজপত্র নিয়ে এসেছি। আরো কিছু কাগজের অপেক্ষায় আছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’ এভারকেয়ার হাসপাতালে কী ভুল চিকিৎসা হয়েছে সে সম্পর্কে এই ‘ড্যাসিং হিরো’ বলেন, যে ডাক্তার আমার চোখের অপারেশন করেছেন, তিনি ক্যাটারাক্ট সার্জারি শেষ করে চোখে লেন্স না বসিয়ে চোখটি ব্যান্ডেজ মুড়িয়ে আটকে দেন। তারপরও যদি বলতেন, ভুল হয়েছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোনো হাসপাতাল বা দেশের বাইরে দ্রুত যেতে হবে; তাহলে বুঝতাম তিনি ভুল করে অনুতপ্ত। কিন্তু সেটি না করে, চোখটাকে আড়াল করতে ব্যান্ডেজ মুড়িয়ে দিলেন। তাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই। সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর জানতে পারলাম, পুরো চিকিৎসাটাই ছিল ভুল। আমার প্রশ্ন, এভারকেয়ারের মতো একটি নামকরা হাসপাতালে এ ধরনের একজন চিকিৎসক কীভাবে বসে আছেন? আরো একটি বিষয় হচ্ছে, এমন একটি হাসপাতালে চোখের চিকিৎসক মাত্র একজন। আমার সঙ্গে ঘটনাটি ঘটেছে বলে এটি প্রকাশ্যে এসেছে। এমন আরো কত ঘটনা আছে, যেগুলো তারাই জানে।
নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, আবারও চিকিৎসার ফলোআপ করার জন্য মার্চে সিঙ্গাপুরে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এদিকে তার ছেলে নায়ক মাশরুর পারভেজ বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম, সিঙ্গাপুরে অপারেশনটা করতে। কিন্তু তাদের (এভারকেয়ার) চাপাচাপিতে অপারেশনটা করতে হয়েছে। সিঙ্গাপুরের ডাক্তাররা চোখ দেখে বলেছেন, অপারেশন জরুরি ছিল না। এভারকেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে আমরা লড়ব।’
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সোহেল রানার চোখের অস্ত্রোপচার নিয়ে কোনো অভিযোগের তথ্য তাদের কাছে নেই। বিষয়টি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছেন।