আরেকটি অঘটন- ফ্রান্সের বিপক্ষে ৮ মিনিট ২২ সেকেন্ডে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে যাওয়ার পর এই কথাটি সম্ভবত অনেকের মনে এসেছে। আসতেই পারে। এর আগে সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার হার। সঙ্গে বিশ্বকাপে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের আছে সাম্প্রতিক ভরাডুবির ইতিহাস। এমন আশঙ্কা একেবারেই অমূলক নয়।
তবে শেষ পর্যন্ত ফ্রান্স সে পথে হাঁটেনি। উল্টো ঘুরে দাঁড়িয়ে পেয়েছে ৪-১ গোলের দুর্দান্ত এক জয়। ফ্রান্সের জয়ে জোড়া গোল করেছেন অলিভিয়ের জিরু। একটি করে গোল করেছেন আদ্রেঁয়া রাবিও ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। একটি গোল এবং একটি অ্যাসিস্ট করলেও ম্যাচে জাদু দেখিয়েছেন এমবাপ্পে। দলের দ্বিতীয় গোলটির সূত্রও ছিলেন এই পিএসজি তারকা। এ ছাড়া ম্যাচজুড়ে গতির ঝলকও দেখিয়েছেন বেশ। কাছাকাছি গিয়ে একাধিক সুযোগ হাতছাড়া না করলে গোল সংখ্যা আরও বাড়তেও পারত।
চোটের পড়ে করিম বেনজেমা নেই। একই কারণে নেই এনগালো কান্তে, পল পগবা, ক্রিস্টোফার এনকুকু এবং প্রেসনেল কিমপেম্বের মতো তারকারাও। তবে সে দুঃখ পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে চেয়েছিল ফ্রান্স। চার ডিফেন্ডার নিয়ে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে দল সাজান দিদিয়ের দেশম। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই লক্ষ্যটা পরিস্কার করে দেয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। শুরুতেই গতিময় আক্রমণে অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণ কাঁপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা।
এই গোলের রেশ কাটার আগেই দ্বিতীয় গোল করে ফ্রান্স। এমবাপ্পের দুর্দান্ত এক ব্যাক হিল ফ্লিক দিয়ে শুরু আক্রমণে এবার বল পেয়ে গোলে সহায়তা করেন রাবিও। তাঁর পাস থেকে সহজেই লক্ষ্যভেদ করে দলকে এগিয়ে দেন অলিভিয়ের জিরু।
এগিয়ে থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজেদের দখলে নেয় ফ্রান্স। আক্রমণের ধারায় সকারুজদের কাঁপিয়ে দিতে থাকে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তবে প্রথমার্ধের শেষ দিকে এমবাপ্পে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। পাল্টা আক্রমণে হুটহাট সুযোগ পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়াও। তাদের একটি আক্রমণ প্রতিহত হয় পোস্টে লেগে। এরপর ২-১ ব্যবধানে বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পরও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল ফ্রান্সের। হাই প্রেসিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরে একের পর আক্রমণে গিয়ে ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করে দেশমের দল। অস্ট্রেলিয়াকে কোণঠাসা করে সুযোগও তৈরি করে তারা। ৬৭ মিনিটে গ্রিজমানের শটে গোল লাইন থেকে বল ফিরে আসলে নিরাশ হতে হয় ফ্রান্সকে।
তবে একটু পর উসমান দেম্বেলের ক্রসে দুর্দান্ত এক হেডে লক্ষ্যভেদ করে জানুব স্টেডিয়ামকে মাতিয়ে তুলেন এমবাপ্পে। ৭১ মিনিটে এমবাপ্পের সহায়তায় নিজের দ্বিতীয় গোল করেন জিরু। চার গোলে এগিয়ে থেকে তখন ফ্রান্সের জয় অনেকটাই নিশ্চিত। ব্যবধান অবশ্য আরও বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। তবে সেগুলো আর কাজে আসেনি।