বিতর্ক আর সাকিব আল হাসান হাত ধরাধরি করে চলেন। কেউ যেন কাউকে ছাড়া একমুহূর্ত থাকতে পারেন না। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাকিব বহুবার বিতর্কে জড়িয়েছেন। কখনো দর্শকের দিকে তেড়ে গিয়ে, কখনো লাথি দিয়ে স্টাম্প ভেঙে, বিসিবির কোড অব কনডাক্ট ভেঙে এমনকী জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করে বারবার তিনি বিতর্কে জড়িয়েছেন।
সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের আগে তিনি ফের জুয়া বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। এবার বিশ্বকাপের আগে তার বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারে কারসাজির অভিযোগ!
গতকাল বুধবার সাকিবকে অধিনায়ক করে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। তার আগে থেকেই গণমাধ্যমে চলে আসে সাকিবের শেয়ার কেলেঙ্কারির খবর। সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে শেয়ার বাজার কারসাজিতে জড়িতদের সঙ্গে নাম এসেছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। শুধু সাকিবের নামেই এক কোটি চার লাখ শেয়ার লেনদেনের হিসাব মিলেছে। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কারসাজির মাধ্যমে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়াতে ভূমিকা রাখে সাকিব ও তার মালিকানাধীন মোনার্ক হোল্ডিংস।
এশিয়া কাপের আগেও সাকিব জড়িয়েছিলেন জুয়া বিতর্কে। ‘বেটউইনার’ নামের একটি অনলাইন জুয়ার সাইটের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘বেটউইনার নিউজ’ এর শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন সাকিব। যা বিসিবির কোড অব কন্ডাক্ট বিরোধী। এমনকী নিয়ম ভেঙে বিসিবির কাছ থেকে এই চুক্তির অনুমতিও নেননি সাকিব। এরপর বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন হুঁশিয়ারি দেন, সাকিবকে ক্রিকেট অথবা জুয়া থেকে একটাকে বেছে নিতে হবে। সাকিব চুক্তি বাতিল করে ভালো ছেলের মতো ফিরে আসেন। শাস্তি তো দূরের কথা, পরদিনই পেয়ে যান টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব। যদিও এশিয়া কাপে শতভাগ পরাজয় নিয়েই দেশে ফিরতে হয়েছিল।
বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিবকে সবসময় ‘পেশাদার ক্রিকেটার’ বলে অন্যদের কাছে উদাহরণ সৃষ্টি করা হয়। তার পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। যেভাবে তিনি বিতর্ক সামলে ক্যারিয়ার এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তা প্রশংসার যোগ্য বটে। তবে গত তিন-চার বছর ধরে যেসব বিতর্কে তার নাম আসছে, সেগুলো মোটেও উদাহরণ সৃষ্টিকারী নয়! বরং অন্যায় করে বারবার পার পেয়ে যাওয়া দেশের জনগন ও তরুণ প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তাই দিচ্ছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্ট এলেই শংকা সৃষ্টি হয় সাকিব এবার কোনো বিতর্কে জড়াবেন না তো?