এশিয়া কাপের এবারের আসরের পর্দা নামতে চলেছে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যকার লড়াই দিয়ে। আগামীকাল রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচের মধ্য দিয়ে এশিয়ার ক্রিকেট পেতে যাচ্ছে তাদের নতুন রাজা। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে দুই দলের মধ্যকার এই ম্যাচ। একটা মজার কথা না বললেই নয়, দুই ফাইনাল খেলা দুটো দলই তাদের এই আসরের যাত্রা শুরু করেছিলো হারের মধ্য দিয়ে। শ্রীলঙ্কা যেখানে নাস্তানাবুদ হয়েছিলো আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেখানে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিলো ভারত। তবে টুর্নামেন্টের বাকি সময়টা শক্ত হাতেই সামলেছে দুই দল, এই ফাইনাল তারই ফলাফল।
তাহলে চলুন দু’দলের এই টুর্নামেন্টের পরিসংখ্যান দেখে আসি :
– শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান উভয় দলই ম্যাচ খেলেছে ৫টি করে।
– শ্রীলঙ্কা জিতছে ৪টি ম্যাচ, পাকিস্তান জিতেছে ৩টি। শ্রীলঙ্কার জয়ের হার ৮০ শতাংশ, পাকিস্তানের ৬০ শতাংশ।
– শ্রীলঙ্কার হয়ে সবচেয়ে বেশি রান নিশাঙ্কার ১৬৫, পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান রিজওয়ানের ২২৬।
– শ্রীলঙ্কার হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট হাসারাঙা এবং মধুশাঙ্কার ৬টি, পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নওয়াজের ৮টি।
এবার আসা যাক অধিনায়কত্বে, কার কতো জয়, প্রভাব প্রতিপত্তি। বাবর আজম এ পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪৬ ম্যাচে। জয় ২৯, পরাজয় ১২। ফলাফল আসেনি এমন ম্যাচের সংখ্যা ৫। জয়ের হার শতকরা ৬৩ ভাগ। বিপরীতে শানাকা এ পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন ৩১ ম্যাচে। জয় ১৪, পরাজয় ১৬। ফলাফল আসেনি এমন ম্যাচের সংখ্যা ১। জয়ের হার শতকরা ৪৬.৭৭ ভাগ।
দেখে আসা যাক উভয় ফলের টি-টোয়েন্টি-তে মুখোমুখি হবার পরিসংখ্যান নিয়ে :
– মোট মুখোমুখি ২১ বার।
– পাকিস্তানের জয় ১৩টি।
– শ্রীলঙ্কার জয় ৮টি।
-পাকিস্তানের জয় শতকরা ৬২ ভাগ।
– শ্রীলঙ্কার জয় শতকরা ৩৮ ভাগ।
এই আসরে দুই দলের মুখোমুখি হবার পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে শ্রীলঙ্কা শতভাগ এগিয়ে। মাত্র একবার-ই মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। যেখানে শ্রীলঙ্কা জয়ী হয়েছে ৫ উইকেটের ব্যবধানে।
পরিসংখ্যানের অধ্যায় শেষ করে এবার ফেরা যাক নতুন গল্পে। ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চিয়তার খেলা। কোন দল কখন নিজেদের জানান দিয়ে দেবে, আবার বিপরীতে কোন দল হোঁচট খেয়ে ছিটকে যাবে- সেটা আমরা কেউ কখনো বলতে পারি না। তবে ইতিহাস কথা বলে। পরিসংখ্যানের বিবেচনায় এখানে শেষে ব্যাটিং করা দলটাই অতিরিক্ত সুবিধা পাবে। ফলে টস জয়ী ক্যাপ্টেন প্রথমে বল করাকেই বেছে নেবেন, তা বলা যায় নিঃসন্দেহে।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে থেকে যায় এই টুর্নামেন্টের উত্থান পতনের গল্প। হট ফেভারিট ভারত যেখানে শুরুটা করলো দুর্দান্ত সেখানে তাদের থেমে যেতে হলো সুপার ফোরের দোরগোড়ায়। আবার শ্রীলঙ্কা যেখানে শুরুটা করেছিলো আফগানিস্তানের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে, সেখানে তারা লড়াই করবে চ্যাম্পিয়ন হতে। ধারাবাহিক পারফর্ম করা পাকিস্তান ঠিক শেষ মুহূর্তে এসে হোঁচট খেলো এই শ্রীলঙ্কার কাছেই।
হয়তো হোঁচট খেয়ে যাওয়া এই ম্যাচ থেকে শিখবে পাকিস্তান আর সেভাবে ফাইনালের জন্য প্রস্তুত করবে নিজেদের। অথবা শ্রীলঙ্কা তাদের জয়ী মনোভাব বজায় রেখে পাকিস্তানের সামনে হয়ে দাঁড়াবে এক কঠিন পর্বত। তবে সবকিছুর উত্তর মিলবে ১১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় শুরু হওয়া ম্যাচের মধ্য দিয়েই।
বাবর আজম নাকি শানাকা কে হাসবে শেষ হাসি? কাদের মাথায় উঠবে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট? কে হবে এশিয়ার নতুন রাজা, তার উত্তর পেতে আমাদের একটু অপেক্ষা তো করতেই হবে। তবে হ্যাঁ, পুরো এশিয়া তাকিয়ে থাকবে ফাইনালের দিকে। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে কে বিজয়ী হবে, সেই অপেক্ষায় থাকবে পুরো ক্রিকেট বিশ্ব। সমস্ত পরিসংখ্যান একপাশে রেখে তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ একটা ফাইনাল দেখার অপেক্ষায় আমরা সবাই।