করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এবং বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় খেলাপি ঋণের পুন তফসিলে নতুন নীতিমালা দেয়া হয়েছে জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, নতুন প্রজ্ঞাপনটি বাস্তবায়নের দায়ভার ব্যাংকগুলোর ওপর বর্তাবে। ব্যাংককে যে সুযোগ দেয়া হয়েছে এর ফলে খেলাপি ঋণ কমে স্থিতিশীল অবস্থায় আসবে।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজেমি সেন্টারে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বিপদে পড়েই গ্রাহক খেলাপি হয়। পুনঃ তফসিলের জন্য ডাউন পেমেন্ট বেশি থাকার কারণে অনেকেই পুনঃতফসিল করতে পারে না। এ কারণে ডাউন পেমেন্টের হার কমানো হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কমে আসবে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেলাপি ঋণের কারণে দেশের ব্যাংকিং খাতের অনেক কিছু নির্ভর করে। খেলাপি ঋণ বেশি থাকলে দাতা সংস্থা ভালোভাবে নেয় না। ব্যাংগুলোকে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের দায়িত্ব দেয়া হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তা তদারকি করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, সোমবারের সার্কুলারে ঢালাওভাবে খেলাপিকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। একটা প্রেক্ষাপটের কারণে সার্কুলার হয়েছে, আবার পুনরায় সার্কুলারও হয় অনেক সময়। তবে অপারেশনাল কাজটা ব্যাংকগুলো নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে করবে। এটা তাদের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এতে জবাবদিহি বাড়বে, খেলাপি কমবে। এ স্বাধীনতা ব্যাংকগুলোর ওপর দেয়ার ফলে এখন থেকে ব্যক্তি ও বোর্ডের ওপর দায়ভার চলে যাচ্ছে।
সোমবার (১৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনা জারি করে। ওই নির্দেশনা মতে, এখন থেকে খেলাপি ঋণে কী সুবিধা দেয়া হবে তা নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ। ব্যাংক মালিকরাই এখন ঋণ খেলাপিদের কী সুবিধা দেয়া যাবে তা ঠিক করে দেবেন। এতদিন বিশেষ সুবিধায় ঋণ নিয়মিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগতো। সেই ক্ষমতা এখন থেকে পুরোটাই ব্যাংকগুলোর হাতে থাকছে।
নতুন ওই নির্দেশনা মতে, এখন থেকে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে আড়াই থেকে সাড়ে চার শতাংশ অর্থ জমা দিলেই হবে। এর আগে নিয়মিত করতে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হতো। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় পেলেও এখন পরিশোধ করা যাবে ৫ থেকে ৮ বছরে। একই সঙ্গে নতুন করেও ঋণ পাওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে সহকারী মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জি এম আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।