কলকাতায় শুরু হয়েছে হস্তশিল্প ও পর্যটন মেলা। অষ্টম বছরে মেলার থিম কান্ট্রি ‘বাংলাদেশ’। কলকাতা ও বাংলাদেশের সমাজকর্মী ও দুই বাংলার সাংবাদিকদের সংগঠন ‘গ্রাসরুট ও এসএজিডিএফ’র উদ্যোগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কলকাতার মহাবোধি সোসাইটি হলে শুরু হয়েছে এই মেলা। মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন ভারত ও বাংলাদেশের প্রায় ৪০ জন ব্যবসায়ী।
করোনার কারণে প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিল মেলা। চলতি বছর মেলা শুরু হতেই কলকাতার গ্রাহকদের ব্যাপক সাড়া মিলেছে। মেলাউ উচ্ছ্বসিত দুই বাংলার ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কলকাতার মানুষের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশের গামছা ও লুঙ্গি। সঙ্গে হাতে তৈরি নকশী কাঁথা বেডশিট, গেঞ্জি ও মশারির চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
বাংলাদেশের ইরা বুটিকসের কর্ণধার ইলিনা রাহী ইরা বলেন, কলকাতায় সামনেই পূজা, এমন সময় মেলা আয়োজিত হওয়ায় ক্রেতাদের বাড়তি সাড়া পাচ্ছি।
বাংলাদেশের আরেক নারী ব্যবসায়ী রোকসানা রিপু বলেন, মেলায় ঢাকাই জামদানি, টাঙ্গাইলের শাড়ি, হাতে বোনা টুপির ব্যাপক চাহিদা। যদি আরও কিছুদিন আগে এই মেলা শুরু করা যেত তাহলে আরও ভালো বাজার পাওয়া যেত।মেলায় ঘুরতে আসা কলকাতার দিশারী পাল বলেন, বাংলাদেশের কাপড়ের দাম কিছুটা বেশি হলেও গুণগতমান অনেক ভালো। বাবার জন্য বাংলাদেশের গামছা-লুঙ্গি কিনতে মেলায় এসেছি।
দিশারী পালের মতোই কলকাতার আইটিকর্মী সুশোভন হাজরা এসেছিলেন মায়ের জন্য পূজার উপহার ঢাকাই জামদানি নিতে। তিনি বলেন, কলকাতায় ঢাকাই জামদানি নামে অনেক শাড়ি বিক্রি হয়। তবে তার বেশিরভাগই নকল। মাকে আসল ঢাকাই জামদানি দিতে পেরে আনন্দিত।
মেলা আয়োজক ও ব্যবসায়ী নাদিরা হোসেন রূপা বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ৩০ জনের বেশি ব্যবসায়ী মেলায় অংশগ্রহণ করলেও চলতি বছর মেলায় এসেছেন মাত্র ১৬ জন ব্যবসায়ী। মহামারির ধকল কাটিয়ে মেলায় ভালো সাড়া মিলবে, এ নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ ছিল। তাছাড়া চলতি বছর মেলার স্থান পরিবর্তন হওয়ায় মেলা কতটা ব্যবসা সফল হবে সেই নিয়েও প্রশ্ন ছিল। তবে সমস্ত বাধা কাটিয়ে প্রতিবছর মেলায় অন্য বছরগুলোর তুলনা তো বেশি সাড়া পেয়েছি আমরা। মেলা কিছুটা আগে শুরু করলে ভালো হতো, আমরা চেষ্টা করব পরের বছর কিছুটা আগে শুরু করার।
কলকাতার মেলা কমিটির অন্যতম আয়োজক সুমিত রায়চৌধুরী বলেন, অষ্টম বছরে আমরা হস্তশিল্পের পাশাপাশি দুই বাংলার অফবিট পর্যটন ক্ষেত্রগুলোকে প্রজেক্ট করতে আলাদা কাউন্টার করেছি। সেখানেও ভালো সাড়া পেয়েছি। তবে অনিবার্য কারণবশত আমাদের মেলার পূর্ববর্তী স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে। ফলে চলতি বছর মেলা শুরু করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। এই বছর আমাদের মেলার থিম কান্ট্রি ‘বাংলাদেশ’। আমরা শুধু এই মেলা কে কেনা-বেচার মাধ্যম হিসেবে দেখি না। এর মাধ্যমে ভারতের কলকাতা, রাজস্থানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক গড়ে উঠছে। এটি দুই দেশের ব্যবসায়ীক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক বড় পাওয়া।
উল্লেখ্য, মেলা চলবে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। প্রবেশ উন্মুক্ত।