কলেজে শারীরিক শিক্ষা চালু ও শরীরচর্চা শিক্ষকদের প্রভাষক পদ এখন সময়ের দাবী। সুন্দর ও আনন্দময় জীবনযাপনের জন্য শারীরিক সুস্থতা একান্ত আবশ্যক। অসুস্থ ব্যক্তির পক্ষে কোনো কাজ পরিপূর্ণভাবে সফল করা সম্ভবপর হয় না। তাই শারীরিক সুস্থতা অর্জনের জন্য শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা খুবই জরুরী।
যে শিক্ষা দেহ ও মনের যুগপৎ পরিবর্তন সাধন করে সে শিক্ষাকেই শারীরিক শিক্ষা বলে। শারীরিক শিক্ষার ব্যবহারিক দিক হচ্ছে খেলাধুলা, সামাজিক সক্ষমতা, সংবেদনশীলতা, ভালো আচরণ, সৌজন্যতা, দেশপ্রেম, একতা, গণতান্ত্রিক মানসিকতা, শিষ্টাচার, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ইত্যাদি। শারীরিক শিক্ষা সাধারণ শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। বস্তুত, মানুষ শারীরিক শিক্ষার মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য অর্জন, সুন্দর মন ও পরিমিত আবেগ লাভ এবং সামাজিক কর্তব্য সচেতন হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে থাকে সি. এ বুচার শারীরিক শিক্ষা হলো শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ, শারীরিক শিক্ষা সুনির্বাচিত শারীরিক কাজকর্মের মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক, আবেগিক এবং সামাজিক দিক দিয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা ।
জে.বি ন্যাশ এর ভাষায় শারীরিক শিক্ষা গোটা শিক্ষার এমন এক দিক যা মাংসপেশির সঠিক সঞ্চালন ও এর প্রতিক্রিয়ার ফল হিসেবে ব্যক্তির দেহের ও স্বভাবের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সাধন করে। পৃথিবীর যে দেশ শারীরিক শিক্ষাকে যত বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সেই দেশ খেলাধুলা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় তত বেশি উন্নতি লাভ করেছে। খেলাধুলা এমন এক মাধ্যম যার মাধ্যমে অর্থ, সম্মান, যশ-প্রতিপত্তি সর্বোপরি শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা অর্জিত হয়। যা সামাজিক বিকাশেও সহায়ক ভূমিকা রাখে।
শিক্ষার্থীদেরকে নিয়মিত খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত করে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতার ব্যবস্থা করা যায়। একে কার্যকর ও
ফলপ্রসূ করতে হলে শারীরিকি শিক্ষা খেলাধুলা ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিষয়কে শ্রেণি কার্যক্রম এবং পাবলিক পরিক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে। আমরা এই তথ্যটি নিশ্চয় জানি কোন কিছুই শূন্য বা খালি থাকে না। আমাদের দেশে খেলাধুলার অপর্যাপ্ততার কারণে কোমলমতি তরুন এবং যুবসমাজ অশ্লীলতা, অপসংস্কৃতি, মাদক ও কিশোর গ্যায়েংর দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সুস্থ নাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষার সর্বস্তরে শারীরিকি শিক্ষা খেলাধুলা ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিষয়কে বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।
শারীরিক সুস্থতা, পারস্পারিক মেলামেশা, সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্যতম ক্ষেত্র হচ্ছে খেলাধুলা। এটা জীবনের সাথে এমনভাবে একীভূত হয়ে আছে যা ব্যক্তির সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে। শুধু ব্যক্তি নয়, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও খেলাধুলা অর্থবহ এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শারীরিক শিক্ষার অজ্ঞতা অন্ধত্ব নিয়ে এ যুগে প্রাণী মানুষ বাঁচলেও সুস্থ মানুষ হিসেবে বাঁচা চলে না। শারীরিক শিক্ষা মানবগতি কার্যের বিজ্ঞান ও কলা। শারীরিক শিক্ষা ছাড়া শিক্ষার পূর্ণতা আসে না। শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে দার্শনিক বুচার বলেন, “সামগ্রিক শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে শারীরিক শিক্ষা এমন এক প্রচেষ্টা যার লক্ষ্য হলো সুনির্বাচিত শারীরিক ক্রিয়া কর্মের মাধ্যমে ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, আবেগীয় ও সামাজিক দিকের উন্নতি ঘটিয়ে তাকে ভবিষ্যতের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। ”শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো বিশ্ব মানব সমাজকে শান্তি ও মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ করা এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করা।
সামাজিক উন্নয়নকল্পে দলগতভাবে বসবাস এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে রোগীর রোগ নিরাময় করে সুখি জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে। শারীরিক শিক্ষা গোটা শিক্ষার এমন এক দিক যা মাংস পেশির সঠিক সঞ্চালন ও এর প্রতিক্রিয়ার ফল হিসেবে ব্যক্তির দেহের ও স্বাভাবের পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সাধন করে। শিক্ষার্থীর নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ থেকে শুরু করে ইতিহাস ও ঐতিহ্য,
চেতনা, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিবোধ, দেশপ্রেম বোধ, প্রকৃতি চেতনা এবং ধর্ম-বর্ণ-গোত্র ও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার প্রতি সমমর্যদা বোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করে। দেশ- বিদেশের বিচিত্র খেলাধুলার চর্চার ভীত গড়ে দেয়। শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা ছাড়া একটি শিশু পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে উঠতে পারে না। আর এভাবে একটি অপূর্ণাঙ্গ মানুষ নিজের এবং দেশের পূর্ণাঙ্গ সেবা করতে ব্যর্থ। শারীরিক শিক্ষা ছাড়া শিক্ষার পূর্ণতা আসে না। শরীর থেকে মনকে যেমন আলাদা করা যায় না তেমনি শারীরিক শিক্ষাকেও সাধারণ শিক্ষা থেকে আলাদা করা যায় না। শিক্ষার পূর্ণতায় এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থে শারীরিক শিক্ষাকে মূল পাঠ্যক্রম ও বোর্ড সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে পাবলিক পরীক্ষায়ও অন্তর্ভুক্তির বিকল্প কিছু নেই। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশ যারা জাতীয় জীবন এবং উন্নতিতে শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলার ভূমিকাকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। পৃথিবীর সব দেশেই ব্যক্তি, সামাজিক ও জাতীয় জীবনে শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলার গুরুত্বপূর্ণ অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে; কিন্তু সেই ভূমিকা থেকে আমরা বঞ্চিত, অবহেলিত। সুস্থ ও উন্নত জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলার বিকল্প নেই। শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলার বিকল্প শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলাই। এর চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা অন্যকিছুতেই পূরণীয় নয়।
সরকারি-বেসরকারি কলেজের শরীরচর্চার শিক্ষকেরা নানা পেশাগত বৈষম্যের শিকার। উপযুক্ত যোগ্যতা-অভিজ্ঞতা থাকলেও পদোন্নতির
সুযোগ নেই। নিম্ন পদমর্যাদার এই শিক্ষক ক্রীড়া বিষয়ের শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও কলেজের ক্রীড়া কমিটির সম্পাদক হতে পারেন না। নিজের জনপ্রিয়তা ও প্রভাব বিস্তার না করলে স্বাভাবিক নিয়মে শরীরচর্চা শিক্ষককে কলেজ পরিচালনা পরিষদের শিক্ষক প্রতিনিধি হওয়ার সুযোগও দেওয়া হয় না, শিক্ষক পরিষদের সদস্য হয়ে অন্যদের নির্বাচিত করা সুযোগ থাকলেও অন্য শিক্ষকেরা শরীরচর্চা শিক্ষককে নির্বাচিত করার ঔদার্য দেখান না। কেননা, বরাবরের মতো কলেজের সব কমিটিতে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকের জ্যেষ্ঠতা বিচার করা হয়। কলেজ পর্যায়ে খেলাধুলা স্তিমিত হওয়ার অন্যতম কারণ প্রভাষক থেকে নিচের পদমর্যাদার শরীরচর্চা শিক্ষকের মতামত যেখানে উপেক্ষিত, অগ্রাহ্য ও গুরুত্বহীন। ফলে ক্রীড়ার ব্যাপারে ব্যাপক উৎসাহী শিক্ষকটিও একসময় চোখ-কান বুজে কোনোরকমে চাকরিজীবন পার করতে ব্যস্ত হন।
খেলাধুলাকে সবাই ভালোবাসলেও খেলাধুলাবিষয়ক শিক্ষকের অবস্থান সবার নিচে। উচ্চতর যোগ্যতায় ডিগ্রি কলেজের লাইব্রেরিয়ানদের প্রভাষকের সমমর্যাদা থাকলেও শারীরিক শিক্ষায় মাস্টার্স (এমপিএড) বা অন্য বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রির শর্ত নিয়োগবিধিতে না থাকায় শরীরচর্চা শিক্ষকেরা প্রভাষকের অনুরূপ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দেশে শারীরিক শিক্ষায় অনার্স-মাস্টার্স চালু হওয়ায় সত্ত্বেও উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি পর্যায়ের এই শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নীতিমালা পরিবর্তন হচ্ছে না। সুনাগরিক ও দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠি তৈরিতে খেলাধুলা ও শারীরিক শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। আর তা না হলে সামাজিক সংকট উত্তরণ সম্ভব নয়। মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগরণের একটি অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে খেলাধুলা ও শারীরিক শিক্ষা।
আমরা শরীরচর্চা শিক্ষক হিসেবে কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত। আমাদের পদবি শিক্ষক। শিক্ষক পদে নিয়োগ, শিক্ষক পদে কর্মরত আবার শিক্ষক পদেই চাকরি থেকে অবসর, যা আমাদের প্রতি চরম অবহেলা এবং অবিচার। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনকও বটে। একই যোগ্যতা নিয়ে যারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন তারা পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য পদে পদোন্নতির সুযোগ পান কিন্তু আমরা যারা কলেজে শরীরচর্চা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাই, তাদের পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। যত বিপত্তি আমাদের বেলায়।
২০১৮ সালের পূর্ব পর্যন্ত কলেজ পর্যায়ের শরীরচর্চা শিক্ষকরা ছিলেন তৃতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় এবং বেতন ভোগ করতেন দ্বিতীয় শ্রেণির। আর এখন মামলার মাধ্যমে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশবলে কলেজ পর্যায়ের শরীরচর্চার শিক্ষকরা দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা এবং দ্বিতীয় শ্রেণির বেতন স্কেল লাভ করেন। শারীরিক ও মানসিক সুস্থ জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা এবং ক্রীড়া শিক্ষকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি জাতীয় অনুষ্ঠানে একজন ক্রীড়া শিক্ষক অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আমাদের শিশুদের এবং জাতির জন্য স্কুল, কলেজগুলোতে শারীরিক শিক্ষা অধিক প্রয়োজন। দীর্ঘস্থায়ী সুখী জীবনের মূল চাবিকাঠি হলো শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা। শারীরিক শিক্ষা এবং খেলাধুলা প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণির সঙ্গে সমান অবস্থায় থাকা উচিত। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ জাতি গঠনে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ-সবল যুবসমাজ প্রয়োজন। যেসব গুণ থাকলে দেশের প্রত্যেক নাগরিক বুদ্ধিসম্পন্ন হয় ও নিছক ভাবাবেগ পরিহার করতে পারে এবং সুস্থ-সবল ও দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠে; শারীরিক শিক্ষা মানুষকে এ গুণগুলো অর্জনে সহায়তা করে। সময়ের দাবির সঙ্গে আমাদেরও দাবি শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলাকে পূর্ণাঙ্গ বিষয় হিসেবে চালু করে এ বিষয়ের শিক্ষকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করুন। এতে শিক্ষকরা যেমন সম্মানিত হবেন; তেমনি জাতিও শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে বেড়ে উঠবে।
আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে বিপিএড, সম্মান এবং মাস্টার্স কোর্স চালু থাকলেও স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা বিষয়টি এখনো অবহেলিত, উপেক্ষিত। আমরা জানি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পুরো পরিবার খেলাধুলাপ্রিয়, খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং পৃষ্ঠপোষক একটি পরিবার। বর্তমান সময়ে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও খেলাধুলাকে প্রচন্ড ভালোবাসেন এবং খেলাধুলাকে সর্বাধিক গুরুত্ব ও সহযোগিতা করেন। তার সময়ই খেলাধুলার সর্বাধিক বিকাশ লাভ করে। আর ঠিক এই সময়েই শারীরিক শিক্ষা এবং খেলাধুলা স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে অবহেলিত থাকবে, উপেক্ষিত থাকবে এটা সত্যিই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। রাষ্ট্রের একটু সুদৃষ্টির অভাবে অনেক কর্মঠ ও দক্ষ লোকও নিস্তেজ হয়ে পড়ে আর সেটা সবচেয়ে বেশি কলেজ শারীরিক শিক্ষকদের বেলায়।
আমরা দেখি, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই সুস্থ জাতি গঠনের লক্ষ্যে শারীরিক শিক্ষা এবং খেলাধুলাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে
চালু রাখা হয়েছে। বিশ্বের সাথে শিক্ষা ক্ষেত্রে তাল মিলাতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত
শারীরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলভাবে চালু করার বিকল্প নেই। জার্মানরা বলত আমরা হাসপাতাল চাই না , খেলার মাঠ চাই। এই সহজ কথা
থেকেই বুঝা যায় শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব। আশা করি আমরাও সেই গুরুত্ব উপলব্দি করবো সততা এবং নিষ্ঠার সাথে।
কলেজ পর্যায়ে একজন ক্রীড়া শিক্ষক কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম, শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা রক্ষায় দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। একজন শরীরচর্চার শিক্ষক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীর কাছে তিনি অতিপরিচিত, সদালাপী এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন বন্ধুরূপী শিক্ষক। শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যক্তিগত অনেক সুবিধা-অসুবিধার কথা নির্ভয়ে তুলে ধরতে পারে, যা অন্যান্য শিক্ষকের কাছে অকপটে বলতে দ্বিধাবোধ করে। আর আমরা সেই শরীরচর্চা শিক্ষকরা এতটাই হতভাগা যে, আমাদের হাহাকার, আমাদের আর্তনাদ কেউ শোনে না। কেউ বোঝে না আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ। অন্যদের পদোন্নতির সুযোগ থাকলেও আমাদের পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। আমরা পদবঞ্চিত থেকেই অবসরে যাই। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, আমাদের হাহাকার, আমাদের আর্তনাদ, আমাদের চিৎকার শুনুন এবং তা লাঘবে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। এতে দেশ, জাতি সবারই মঙ্গল হবে বলে বিশ্বাস করি।