কারাবন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চি। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) তিনি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানিয়েছে ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাবন্দি অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সু চি। দেশটির জান্তা সরকার তার চিকিৎসার জন্য বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ নেওয়ার দাবিও নাকচ করে দিয়েছে। তবে বর্তমানে ৭৮ বছর বয়সী অসুস্থ নেত্রীকে কারা বিভাগের অধীনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার তার চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ও সরকারের অনুগত একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, সু চির মাড়ি ফুলে গেছে। তিনি ঠিকমতো খেতে পারছেন না। এ ছাড়া তার বমিসহ হালকা মাথাব্যথা রয়েছে। ওই সূত্রটি আটক হওয়ার ভয়ে তার পরিচয় প্রকাশ করেননি।
সু চির চিকিৎসার বিষয়ে কথা বলার জন্য জান্তা সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।
এর আগে গত ২৪ জুলাই তাকে কারাগার থেকে সরিয়ে রাজধানী নাইপিডোর একটি সরকারি বাসভবনে তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয় বলে জানায় ।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। এরপর তাকে কারাগারে এক বছরের বেশি সময় আটক করে রাখা হয়। বিভিন্ন মামলায় ৭৮ বছর বয়সী সু চিকে ৩৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসব রায়েই বর্তমানে তিনি জেলে আছেন।
কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় সু চির অসুস্থতার বিষয়ে বেশ কয়েকবার গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে গত দুই বছর ধরে তার শারীরিক অবস্থার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মিয়ানমারের জান্তা সরকারও এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি।
২০২১ সালে সেনাবাহনীর হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। সেনা অভ্যুত্থানের পর শুরুতে সু চিকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল। পরে গত বছর মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিডোতে তাকে কারাবাসে পাঠানো হয়।
শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি প্রায় ১৫ বছর ধরে গৃহবন্দি থাকার পর ২০১০ সালে মুক্তি পান। সামরিক শাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট মিয়ানমারে বন্দি সু চি বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠেছিলেন। মিয়ানমার ও বিশ্বজুড়ে তার মুক্তি উদ্যাপন করা হয়েছিল।
তবে পরবর্তীকালে তার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনা নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে চুপ থেকে তিনি সমালোচিত হন। সেসব নিপীড়িত রোহিঙ্গারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন।