পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আইনজীবীদের সোমবার (৭ আগস্ট) তার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তার আইনজীবীরা।
ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিতে আসা ৭০ বছর বয়সী ইমরান খান গত বছর অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর থেকেই পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজমান। এর মধ্যে দেশটি মারাত্মক বন্যার কবলে পড়ে বিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়ে যার ধাক্কা এখনো কাটাতে পারেনি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল প্রাথমিকভাবে ৩ বিলিয়ন ডলার বেলআউট প্যাকেজের অনুমোদন দিয়ে পাকিস্তানকে দেউলিয়া হওয়ার পথ থেকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংকটে জর্জরিত পরমাণু শক্তিধর দেশটির স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা।
পুলিশ শনিবার ইমরান খানকে তার লাহোরের বাসভবন থেকে আটক করে নিয়ে যায় এবং তাকে রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে অ্যাটক জেলার একটি কারাগারে স্থানান্তর করে। এখানকার একটি আদালত তাকে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির দায়ে দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। সেইসঙ্গে তাকে পাঁচ বছরের জন্য রাজনীতি থেকে দূরের থাকার নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, সম্ভবত নভেম্বরে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে ইমরান খানকে।
ইমরানের একজন আইনজীবী নাঈম পাঞ্জুতা বলেছেন, ‘জেল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে ইমরান খানের সঙ্গে দুপুর সাড়ে ১২টায় দেখা করার জন্য সময় দিয়েছে। আমরা অ্যাটক কারাগারে পৌঁছেছি। তাকে প্রদান করা সাজার বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। ইমরান খান কাগজপত্র প্রস্তুত করার পরে আপিল দায়ের করা হবে।’
ইমরানের আইনি দল কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে কারাগারে আরও ভাল সুবিধা প্রদানের জন্য আবেদন করছে বলে পাঞ্জুতা এর আগে ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের বলেছিলেন। ইমরান খানকে শুরুতে সি ক্লাসের বন্দী হিসেবে তালিকাবদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু অধিকার অনুসারে তাকে এ ক্লাস সেল দেওয়ার কথা ছিল।
রাজনৈতিক বন্দিরা টেলিভিশন, সংবাদপত্র ও বইসহ আরও ভালো সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখে।
পাঞ্জুতা বলেন, ‘আমাদের তথ্য অনুযায়ী, খানকে সি-ক্লাসে রাখা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ চলতি সপ্তাহে সংসদ ভেঙে দিয়ে নভেম্বরের মধ্যে সাধারণ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করার আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হচ্ছে।