যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন সামরিক নথি ও কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করে বিশ্ব জুড়ে হইচই ফেলে দেওয়া উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের দেহে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী। যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া অ্যাসাঞ্জকে এখন বেলমার্শ কারাগারে পুরোপুরি আইসোলেশনে রাখা হয়েছে, সোমবার অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা মরিস এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম ।
স্টেলা মরিস সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার (অ্যাসাঞ্জ) স্বাস্থ্যের জন্য সামনের কয়েকটি দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাকে এখন তার কক্ষে ২৪ ঘণ্টা তালাবদ্ধ অবস্থায় রাখা হয়েছে।’ পেশায় আইনজীবী এই নারী জানান, কাশি ও জ্বর নিয়ে শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়েন অ্যাসাঞ্জ; কোভিড শনাক্তকরণ পরীক্ষার আগে তাকে প্যারাসিটামল দেওয়া হয়। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ফুসফুসের জটিলতায় ভোগা অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত অ্যাসাঞ্জ ২০২০ সালের শুরুর দিকে জামিনের আবেদন জানালেও সে সময় তা প্রত্যাখ্যাত হয়। ফুসফুসের জটিলতার কারণে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা এমনিতেই কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণদের তালিকায় ছিলেন। পেন্টাগনের গোপন নথি প্রকাশ্যে আনায় গুপ্তচরবৃত্তি ও হ্যাকিংয়ের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যের আদালত তাকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের পক্ষে রায় দেয়।
২০১৯ সালে ইকুয়েডর সরকার শরণার্থীর মর্যাদা তুলে নিলে ব্রিটিশ পুলিশ লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে তিনি যুক্তরাজ্যের হাই সিকিউরিটি বেলমার্শ কারাগারে বন্দি দিন কাটাচ্ছেন। সেখানে তার স্বাস্থ্যের বেশ অবনতিও হয়েছে।
কারাগারে থাকার ফলে তার ওজন অনেকখানি কমে যায় এবং তিনি গুছিয়ে কথা বলার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন, যে কারণে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে পরে কারা হাসপাতালে স্থানান্তর করে। গত বছরের ডিসেম্বরে স্ট্রোক হওয়ার পর তার স্নায়বিক ক্ষতি, চোখের পাতা ঝুলে পড়া এবং স্মৃতিশক্তিজনিত সমস্যা দেখা দেয় বলে তার স্ত্রী জানিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ নিয়ে যা চলছিল, তার চাপেই অ্যাসাঞ্জের স্ট্রোক হয় বলেও সে সময় বলেছিলেন স্টেলা।