- যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী-লীগ এর চির স্থায়ী সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের একক নেত্রীত্বে ঘুরপাক খাচ্ছে।
- সাধারণ সম্পাদক ও বেশ কয়েকজন সহ-সভাপতি তার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছে।
- প্রদেশ কমিটিগুলো আটকে রাখা হয়েছে বহুদিন। অভিযোগ আছে তার দাবি করা টাকা না দেয়ায় কমিটি গঠণ করা হচ্ছে না।
ফ্লোরিডায় তার প্রতিপক্ষ কমিটি ঘোষণা করার পরেই তড়িঘড়ি করে তার অনুসারিরা আর একটা কমিটি গঠণ করেছে। জদিও তারা বলছেন তাদের কমিটি গত বছর জুলাই মাসে গঠণ করা হয়েছে কিন্তু কৌশলগত কিছু কারনে এতো দিন ঘোষণা করা হয়নি।যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী-লীগ এর সহ-সভাপতি ‘ফজলুর রহমান’ ও সভাপতি ‘সিদ্দিকুর রহমান’ ফ্লোরিডায় পাল্টাপাল্টি কমিটি ঘোষণা করেছে। এর ফলে বিরূপ মনোভাব দেখা দিয়েছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
গত ১৩ মার্চ ফ্লোরিডার এক সমে¥লন কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি ফ্লোরিডায় বসবাসকারী “ফজলুর রহমান” এক সম্মেলন করে ‘নান্নু আহম্মেদ’কে সভাপতি ও ‘মুজিব উদ্দিন’কে সাধারণ সম্পাদক করে প্রদেশ আওয়ামী লীগের একটি কমিটি ঘোষণা করেছেন। এর পরেই সভাপতির অনুসারীরা তড়িঘড়ি করে ‘মোহাম্মদ এমরান’কে সভাপতি ও ‘মোহাম্মদ আকরাম হোসাইন’কে সাধারণ সম্পাদক করে আরও একটা কমিটি ঘোষণা করেছেন।এ দিকে সভাপতি “সিদ্দিকুর রহমান”-এর অনুসারী হিসাবে পরিচিতরা দাবি করেছে তারা গত জুলাইয়ে প্রদেশ কমিটি গঠণ করেছেন। যার সভাপতি পদে জনাব ‘মোহাম্মদ এমরান’ ও সাধারণ সম্পাদক পদে জনাব ‘মোহাম্মদ আকরাম হোসেন’-কে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়।
এ বিষয় প্রশ্ন করা হলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী-লীগের এক নেতা বলেন, যহেতেু যুক্তরাস্ট্র আওয়ামী-লীগের সহ-সভাপতি জনাব “মোল্লা ফজলুর রহমান” কথিত রাজাকার পুত্রকে সাধারণ সম্পাদক করার জন্য অনড় অবস্থান নিয়েছেন তাই আমরা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী-লীগ নেতৃবৃন্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক পদ পদবী দেওয়ার আগে অনুসন্ধান করতে গিয়ে র্দীঘ সময় অতিবাহিত করি। যার জন্য কমিটি ঘোষণা কিছুটা বিলম্ব হয়। তদন্তে প্রমাণিত হয় মোল্লা ফজলুর রহমান মনোনীত সাধারণ সম্পাদক পদর্প্রাথী আওয়ামী বিরোধী পরিবারের সন্তান এবং তার পরিবারের অন্যান্য সকল সদস্য জামাত-বিএনপির রাজনীতি ও অর্থ যোগানোর সাথে সম্পৃক্ত আছে, যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিশিষ্ট লেখক ও মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার জনাব সিরু বাঙ্গালী ২০১৮ সালে তদন্ত করে উক্ত সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীর পিতা রাজাকার ছিলেন বলে প্রত্যয়ণ-পত্র দিয়েছিলেন।
তারা প্রধান মন্ত্রীর পদায়নের বিষয় ঘোষণার কথা মনে করিয়ে বলেছেন, আমরা কোন যুদ্ধাপরাধে অপরাধীর সন্তানকে আওয়ামী লীগের কোন পর্যায় মেনে নিতে প্রস্তুত না।
২০২২ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখ সম্মেলনের কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো। সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদর্প্রাথীদের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে সম্পৃক্ততা বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী-লীগ কর্তৃক এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একই সাথে তারা আওয়ামী-লীগের সকল সদস্যকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছে।এদিকে ফজলুর রহমান এর পক্ষের এক নেতা বলেন, সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান একজন কর্তৃত্ববাদী মানুষ। প্রায় এক বছর আগে সম্মেলন হয়েছে কিন্তু কোন পদেই কাওকে পদায়ন করেনি। কমিটি গঠণ করতে বললে সে তা এড়িয়ে গিয়েছেন। কিছু স্বার্থান্বেষী বাদে তার সাথে তেমন কেউ নাই।
তাদের পক্ষের এক নেতার পিতার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আছে সে বিষয় এক প্রশ্নের উত্তরে উক্ত নেতা বলেন ‘তিনি আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক, তার বাবা যদি রাজাকার হয় তবে আগের বার পদ পেলেন কিভাবে? তখন তারা বের করলো না কেন তিনি রাজাকারের ছেলে? এ সব বাজে কথা, এটা ওদের রাজনৈতিক নোংরামী।’
তিনি আরও বলেন ‘আওয়ামী-লীগের সাথে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। সে কখনো অন্য দলের সাথে যুক্ত ছিল না। ওদের অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই এইসব করে ওরা। আমরা এ সব নিয়ে ভাবছি না’।
তবে আপনি ফ্লোরিডার নেতা-কর্মীদের জিজ্ঞেস করেন, দেখবেন তাদের বিরুদ্ধে কত অভিযোগ। জানতে পারবেন দীর্ঘ দিন ধরে আওয়ামী-লীগের সভাপতি “সিদ্দিকুর রহমান” তার অনুগত কিছু নেতাকে নিয়ে পার্টির কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি থাকলেও প্রদেশ কমিটিগুলো নেতা-কর্মীদের চাহিদা মত গঠণ করা হচ্ছেনা। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি বলেই তারা আমাদের মধ্যে রাজাকারের ভূত খুজে বেড়ায়।
আর আমাদের কমিটিতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর অনুমোদন আছে। চাইলেই কেউ বাতিল করতে পারবে না। আমাদের কমিটি অমান্য মানে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে অমান্য করা, সেটা কি তাদের পক্ষে সম্ভব হবে?
তাকে প্রশ্ন করা হয় আপনারা যে বলেন আপনাদের কমিটিতে প্রধান মন্ত্রীর অনুমোদন আছে, ওবায়দুল কাদেরের লিখিত অনুমতি আছে কিন্তু আপনাদের প্রতিপক্ষরা বলে এই সই জাল। এর উত্তরে উক্ত নেতা বলেন তারা প্রমান করুক এটা জাল। যেহেতু তারা জাল বলেছে তা প্রমান করার দায়ও তাদের, তারা তা প্রমান করুক।
তিনি একই সাথে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘তাদের কমিটি যদি বৈধ হয় তবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী-লীগের ওয়েবসাইটে তাদের কথা নাই কেন’? যদি ওয়েবসাইটে তাদের কমিটি স্থান পায় তবে আপনারা তাদের মেনে নিয়ে আপনাদের কমিটি বাতিল করবেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন ‘না, তবুও মেনে নিব না, কারন আমাদের কমিটি খোদ মাননীয় প্রধান মন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন, সে কমিটি আমরা বাতিল করার ক্ষমতা রাখি না।’ তবে এখন এই জটিল পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার পথ কী? এর উত্তরে তিনি বলেন অন্য কমিটিরতো অনুমোদনই নাই, তবে পরিস্থিতি তারা জটিল করেছে এর সমাধান তারাই করবে। আমরা ওদের নিয়ে ভাবছি না।
পালটাপালটি কমিটি করায় ফ্লোরিডা আওয়ামী-লীগের কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে একজন ত্রাতার অপেক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী-লীগ এর সাধারণ নেতা কর্মীরা।