আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটারদের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুমারখালী পৌরসভার মেয়র সামসুজ্জামান অরুণ।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) কুমারখালীতে কয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সামসুজ্জামান অরুণ নৌকার প্রার্থী সেলিম আলতাফ জর্জকে ভোট না দিলে ৭ জানুয়ারি পর ভোটারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার হুমকি দিয়ে বলেন, ‘৭ তারিখের পরে আপনাদের সঙ্গে যেন আমাদের দুর্ব্যবহার করা না লাগে, আপনারা যদি বাড়ি থেকে বের হতে না পারেন, আমরাই কিন্তু কষ্ট পাবো।’ তার এই বক্তব্যের একটি ভিডিও এসেছে।
ভিডিওতে দেখা যায় সামসুজ্জামান অরুণ বলছেন, ‘ভোট যাই হোক ফলাফল নির্ধারিত, সেলিম আলতাফ জর্জের নামই এমপি হিসেবে ঘোষিত হবে।’
তিনি বলেন ‘এত বড় চাপের মুখেও যখন শেখ হাসিনা নির্বাচন করতেছে, তার নির্বাচনের একটা ছক আছে। তাই যতই বিরোধিতা করেন, যতই বাড়ি বসে থাকেন, যতই রউফ সাহেব রউফ সাহেব করেন, দিন শেষে কিন্তু এমপি আমরাই হবো।’
এদিকে তার এই বক্তব্যের পরে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ঐ সমাবেশে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় তাঁতি লীগের সহসভাপতি অ্যাড. নিজামুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সেলিম আলতাফ জর্জের চাচা কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুমারখালী পৌরসভার মেয়র সামসুজ্জামান অরুণ।
এর আগে গত ২৮ নভেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে আবদুর রউফ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘কুমারখালী-খোকসাতে ভোটারদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে।’
ভোটারদের হুমকি-ধামকির বিষয়ে জানতে কুমারখালী থানার অফিসার ওসি আকিবুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানাই নাই। জানালে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ভোটারদের হুমকি-ধামকির বিষয়ে জানতে জেলা নির্বাচন অফিসার মুহাম্মদ আবু আনছার বলেন, ‘আমাদের ওখানে আচরণবিধি দেখভালের বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ আছে, তারপরে জুডিশিয়াল ইনকয়ারি কমিটি আছে, আমার মনে হয় আপনি তাদের একটু জানাতে পারেন। আর আমি বিষয়টা রিটার্নিং অফিসারের নলেজে দিবো।’
সামসুজ্জামান অরুণের এ বক্তব্য প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, ‘কোনো জনপ্রতিনিধি এ ধরনের বক্তব্য দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তার বক্তব্যের কোন ডকুমেন্ট থাকলে নির্বাচন কমিশনের বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাছে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে সামসুজ্জামান অরুণকে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।