কে হচ্ছেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি—তা আজ রবিবার জানা যাবে। এ দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হচ্ছে। তপশিল অনুযায়ী, সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। জাতীয় সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেও তপশিল ঘোষণাসহ এ নির্বাচন পরিচালনা করে নির্বাচন কমিশন।
বর্তমানে জাতীয় সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দিবে তিনিই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন। এ ছাড়া বর্তমানে সরকারবিরোধী বিএনপির কেনো সংসদ সদস্যও নেই। জাতীয় পার্টি বিরোধীদল হলেও বড় বড় নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। ফলে আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা মনোনীত ব্যক্তিই যে রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন তা একেবারেই নিশ্চিত। তবে দলটি এখন পর্যন্ত তাদের প্রার্থী কে তা প্রকাশ করেনি। তবে সেটি জানা যাবে আজকেই। যদিও অনানুষ্ঠানিকভাবে দলটির পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই মনোনয়নে প্রস্তাবক, সমর্থক ও মনোনীত ব্যক্তির স্বাক্ষর সম্পন্ন করে ইসিতে আজই জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিক ইসির একাধিক সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার ছুটির দিনেও অফিস করেছেন ইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মনোনয়নের ফরম তোলা ও জমাদানের জন্য এ বিভাগ খোলা ছিল। তবে বিকাল পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ফরম সংগ্রহ বা জমা হয়নি। অন্য প্রায় সব নির্বাচনেই জামানতের নিয়ম থাকলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কোনো জামানত নেই। ফলে এ নির্বাচনের জন্য কোনো ব্যাংক থেকে পে-অর্ডার/ড্রাফট হয়েছে বলেও কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনে মনোনয়নপত্র দাখিল সম্পর্কে বলা আছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত দিনে ও সময়ের মধ্যে কোনো সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তিকে ঐ পদের জন্য মনোনীত করে নির্বাচনি কর্তার কাছে একটি মনোনয়নপত্র দিতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের জন্য সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে একজন প্রস্তাবক ও একজন সমর্থক হতে হয়। প্রস্তাবক এবং সমর্থক স্বাক্ষরের পর যিনি রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত হতে যাচ্ছেন, তারও উক্ত মনোনয়নে সম্মতিসূচক স্বাক্ষরিত বিবৃতি থাকবে। তবে প্রস্তাবক বা সমর্থক হিসেবে কোনো সংসদ সদস্য একটির বেশি মনোনয়নপত্র সই করবেন না।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটের তারিখ। তবে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দল কাউকে প্রার্থী করার সম্ভাবনা নেই। এর বাইরে অন্য কোনো প্রার্থীও এখন পর্যন্ত নেই। একক প্রার্থী হলে শেষ পর্যন্ত আর ভোটের প্রয়োজন হবে না। এর আগে ১৯৯১ সালে সংসদীয় ব্যবস্থায় ফেরার পর থেকে মাত্র একবার রাষ্ট্রপতি পদে ভোটের প্রয়োজন পড়েছিল।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তপশিল অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করা হবে। আইন অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পর মাত্র একজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।