গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান গায়িকা এবং অভিনেত্রী অলিভিয়া নিউটন-জন মারা গেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (৮ আগস্ট) ক্যালিফোর্নিয়ার নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে এ খবর জানানো হয়। ৭৩ বছর বয়সে চলে গেলেন অলিভিয়া নিউটন।
তাকে সিবিএস নিউজ জিজ্ঞেস করেছিল তিনি কিভাবে ক্যান্সারকে মোকাবেলা করছেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘এটি আমার দিনগুলোকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে এবং একটা সময় পর আমি চলে যাব। তুমি জানো যে এখন আমার জীবনটা উপভোগ করতেই হবে। তাই আমি মন চাইলেই একটি বিস্কিট খেয়ে নিই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার সেরে ওঠার লড়াইয়ের মধ্যেই জীবনের আনন্দ এবং প্রতিদিনের জীবনযাপনকে অংশ করে নিতে হবে। তাই আমি সেই পথ বেছে নিয়েছি। এ পথেই আমি কৃতজ্ঞ বোধ করি। এসব বিষয়ে ভালো বোধ করতে চাই, কারণ এর অন্য পিঠটা এতটা ভালো নয়। ‘
ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান গায়িকা এবং অভিনেত্রী ‘গ্রিস’ চলচ্চিত্রে স্যান্ডি চরিত্রে অভিনয় করে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিলেন, যা এখন পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে সফল মিউজিক্যাল রোমান্টিক-কমেডি চলচ্চিত্র বলে বিবেচিত হয়।
সামাজিক মাধ্যমটির ওই পোস্টে বলা হয়, আজ সকালে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় তার খামারবাড়িতে পরিবার এবং বন্ধু পরিবেষ্টিত অবস্থায় ডেম অলিভিয়া নিউটন-জন ৭৩ বছর বয়সে শান্তিপূর্ণভাবে মারা গেছেন।
১৯৯২ সালে তিনি প্রথম স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। ধরা পড়ার পর নিউটন-জন ক্যান্সার গবেষণার জন্য তার দাতব্য প্রতিষ্ঠান অলিভিয়া নিউটন-জন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ পাউন্ড সংগ্রহ করেন। এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০ সালে তাকে নাইট পদমর্যাদার সমতুল্য ‘ডেম’ পুরস্কারে ভূষিত করেন রানি এলিজাবেথ।
সত্তরের দশকে তার গানের জনপ্রিয়তা আমেরিকাতেও ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
নিউটন-জন ১৯৪৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর ছিলেন। তার মা ছিলেন জার্মান নোবেল বিজয়ী ম্যাক্স বর্নের কন্যা এবং ১৯৩৩ সালে নাৎসিরা ক্ষমতায় আসার পর তিনি পরিবারের সাথে পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরিবারটি ১৯৫৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যায়, সেখানেই তিনি বেড়ে ওঠেন।
তার সাফল্য আসে ১৯৭১ সালে যখন তিনি বব ডিলানের লেখা একটি ট্র্যাক প্রকাশ করেন, ইফ নট ফর ইউ, যা ইউকে চার্টে সাত নম্বরে পৌঁছেছিল এবং একই নামের একটি অ্যালবামে প্রদর্শিত হয়েছিল।
অলিভিয়া চারটি গ্র্যামি পুরস্কার জিতেছেন এবং ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে সাতটি গান ইউএস নম্বর ওয়ানে স্থান করে নেয়। ১৯৭৮ সালে তিনি গ্রিস মুক্তির মাধ্যমে বিশ্বতারকা হয়ে ওঠেন। ২০১৯ সালে তার তৃতীয়বারের মতো স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে।