শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকে জাতীয়করণের বিষয় কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ চান তারা।
গতকাল বুধবার বিকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সন্ধ্যায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলনে থাকব। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচ মিনিট সাক্ষাৎ চাই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটা আমরা মেনে নেব।’
শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে গিয়ে আমরা হতাশ হয়েছি। সেখানকার সব চেয়ারে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ নামের একটি সংগঠন সব চেয়ার দখল করে রাখে আগে থেকেই। এছাড়াও সেখানে আমাদের কোনো কথা শোনা হয়নি; শুধু স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ নামের এ সংগঠনই সেখানে কথা বলার সুযোগ পায়।
দুটি কমিটি গঠন : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীকরণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ সম্ভব নয়। একই সঙ্গে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ যাচাইয়ের জন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে দুটি কমিটি হওয়ারও কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, নির্বাচনের আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিটি পূরণ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়া বিশেষভাবে এই মুহূর্তে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এই অবস্থার মধ্যে আর্থিক বিরাট একটি বোঝা কাঁধে নেওয়া কোনো সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা যে জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করছেন, এখানে যাতে কোনো বৈষম্য না থাকে, সেটি গবেষণা করে দেখার জন্য তাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। আর এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আর্থিক বিষয়টি গবেষণা করে দেখার জন্য আরেকটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে; তারা দেখবে এতে আমাদের আর্থিক সক্ষমতা অনুযায়ী কতদূর আগানো সম্ভব বা কত দ্রুত এটি আমরা দিতে পারব। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতনসহ অনেক খরচই সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানসমূহে দেওয়া হয়, কিন্তু সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের আয় থেকে কোনো অর্থ নেয় না; এই পুরো বিষয়টি গবেষণা করে দেখা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এই দুটি কমিটি করার জন্য উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ খুঁজে বের করা হবে। আমরা আশা করি, আগস্ট মাসের মধ্যে এই দুটি কমিটি গঠন করে দিতে পারব। তারপর কমিটিকে তাদের কার্যপরিধি ঠিক করে দিতে হবে এবং কাজসমূহ সম্পন্ন করার জন্য কমিটিকে সময় দিতে হবে। মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে গত ৯ দিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা।