ভারতের কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। তবে বুঝিয়ে দিলেন, রাহুলই দলের মুখ থাকবেন। এক সাধারণ কারখানা-শ্রমিকের ছেলে থেকে কংগ্রেসের সভাপতি দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর মল্লিকার্জুন খাড়গে জানালেন, ১৯৬৯ সালে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হলেন। এক সাধারণ কংগ্রেস কর্মীর অসাধারণ যাত্রার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রথম দিনেই বেশ কয়েকটি বিষয় তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন এবং দল পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় বদল এনেছেন।
এতদিন দলে সবচেয়ে গুরুত্ব পেত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। কিন্তু খাড়গে সেই কমিটি ভেঙে দিয়ে ৪৭ সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করেছেন। সেই কমিটিতে দলের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ প্রবীণ নেতাকে রাখা হয়েছে। তবে যারা বাদ পড়েছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, সভাপতি নির্বাচনে খাড়গের প্রতিদ্বন্দ্বী শশী থারুর, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, তার প্রতিদ্বন্দ্বী নেতা শচিন পাইলট, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল।
কমিটিতে সোনিয়া, রাহুল, প্রিয়ংকা, মনমোহন, চিদম্বরম, পবন বনসল, মীরা কুমার, এ কে অ্যান্টনি, অভিষেক সিংভি, অম্বিকা সোনি, সলমন খুরশিদ, ভক্তচরণ দাস, হরিশ রাওয়াত, উমানচণ্ডী, লালথানহাওলার মতো নেতারা আছেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিক্ষুব্ধ নেতা আনন্দ শর্মাকেও কমিটিতে রাখা হয়েছে। রাহুল গান্ধীর পছন্দের নেতা রণদীপ সূরযেওয়ালা, অজয় মাকেন, জিতেন্দ্র সিং, কুমারী শৈলজারা কমিটিতে আছেন। এমনকি বিসিসিআই সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লাকেও কমিটিতে রাখা হয়েছে।
খাড়গে প্রথম দিনেই একটা কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাহুল গান্ধীই আগের মতো প্রধান প্রচারকারীর ভূমিকায় থাকবেন এবং তিনিই হবেন দলের মুখ। রাহুল যেভাবে ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা করছেন, খাড়গে তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, রাহুল একটা আলোড়ন তৈরি করেছেন। সেটাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। রাহুলের স্লোগান ধার করে তিনি বলেছেন, ‘ডরো মত’। রাহুলও তার যাত্রা ছেড়ে খাগড়ের সভাপতি হওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
খাড়গে বলেছেন, সভাপতি হিসাবে তার কাজ হবে, দেশের সংবিধান রক্ষা করা, যারা ঘৃণা ছড়াচ্ছে, তাদের মোকাবিলা করা, অন্যের অধিকারকে সম্মান জানানো, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ও ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করা। তিনি বলেছেন, কংগ্রেস কর্মীরা যদি ভয়কে জয় করতে পারেন, তাহলে তারা হিমাচল, গুজরাট সহ বিভিন্ন রাজ্যের ভোটে সফল হবেনই।