খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা মিলছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র বিশেষায়িত এ হাসপাতালটিতে সরকারিভাবে স্বল্প খরচে গরিব ও অসহায় রোগীদের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বিশেষায়িত এ হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ।
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল সূত্র জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র উন্নত আধুনিক চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল। যেখানে সরকারিভাবে স্বল্প খরচে গরিব ও অসহায় রোগীদের উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতালটিতে অর্থপেডিক্স, কার্ডিওলজি, নিউরোলজি, ইউরোলজি, ডায়াবেটিস, কিডনি, দন্ত, লিভার, নিউরো মেডিসিন, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি-ইউনিট, ফিজিওথেরাপি সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন হাজারের মতো রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। তবে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা মিলছে না। এছাড়া রোগীদের চাপে প্রতিদিন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের চিকিৎসা সেবার জন্য আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামাদি অচল হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া ব্রেন টিউমার অপারেশনের জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা অপারেটিভ মাইক্রোস্কোপ অব নিউরো সার্জারি মেশিনটি এখনো ইন্সটল অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বুঝে পায়নি। তাছাড়া রেডিওলোজী বিভাগের একটি এমআরআই মেশিন ও একটি সিটি স্ক্যান মেশিন অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। এখনো পর্যন্ত এটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি। হার্টের রোগীদের জন্য একটি এক্সারসাইজ টলারেন্স টেস্ট (ইটিটি) মেশিনও প্রায় দুই বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। পাশাপাশি একটি ক্যাথল্যাব ও একটি এনজিওগ্রাম মেশিন অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালে আধুনিক বেশ কয়েকটি চিকিৎসা সরাঞ্জামাদি (মেশিন) অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। আমরা অনেকবার এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। সেখান থেকে বড় বড় প্রকৌশলীরা এসেও এসব মেশিন সচল করতে পারেননি। যে কারণে এসব মেশিন ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এছাড়া ব্রেন টিউমার অপারেশনের জন্য আধুনিক অপারেটিভ মাইক্রোস্কোপ অব নিউরো সার্জারি মেশিনটি এখনো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হাসপাতালকে বুঝিয়ে দিতে পারেনি। আমরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ১১ বার অনুরোধপত্র (রিমাইন্ডার) দিয়েছি। কিন্তু তারা এখনো মেশিনগুলো চালু করে বুঝিয়ে দেয়নি।
তিনি বলেন, আমরা অকেজো মেশিনগুলো সচল করার জন্য মন্ত্রণালয়েও চিঠি প্রেরণ করেছি। বড় বড় মেশিনগুলো সচল না থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। মেশিনগুলো সচল থাকলে রোগীরা আরো বেশি চিকিৎসা সেবা পেত। মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দেব প্রসাদ দাস বলেন, হাসপাতালটিতে কয়েকটি টেস্ট করাতে এসেছিলাম। কিন্তু মেশিন নষ্ট থাকায় টেস্ট না করে চলে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, ইতিমধ্যে ইইজি ও হলটার মেশিন ঠিক করা হয়েছে। তবে, ইটিটি মেশিনটি বেশ আগেই নষ্ট ঘোষণা করা হয়েছে। আশা করছি, এই মেশিনটি খুব দ্রুতই পাওয়া যাবে। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসকও বাড়ানো হয়েছে। আমরা সাধ্যমতো রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।