ঘুষ, দুর্নীতি, খেলাপি ঋন এবং টাকা পাচার একটি দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধ্বংস করে দেয়। এই সমস্যাগুলি কেবলমাত্র একটি দেশের অর্থনীতিকেই নয়, বরং তার সামাজিক কাঠামোকেও বিপর্যস্ত করতে পারে। ঘুষ, দুর্নীতি এবং টাকা পাচার আামাদের দেশের একটি অতি প্রধান জাতীয় সমস্য। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতিতে ঘুষ, দুর্নীতি, খেলাপি ঋণ এবং টাকা পাচার অনেকটা মরার উপর খাঁড়ার ঘা। ঘুষ, দুর্নীতি এবং টাকা পাচার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ঘুষ ও দুর্ণীতির রোগে বাংলাদেশের সেবাখাতগুলো আক্রান্ত। একটি দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি, গতিশীল অর্থনীতির জন্য এদের প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুষ, দুর্নীতি, খেলাপি ঋণ এবং টাকা পাচার রোধ করতে না পারলে জীবনবোধ ধ্বংস হবে, শিক্ষা, ক্রীড়া-সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্য, উন্নয়ন, উন্নতি, সমৃদ্ধি, জাতীয়, আন্তর্জাতিক প্রভৃতি খাতে বন্ধাত্ব তৈরী হয়। ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও দুর্নীতি নতুন মাত্রা পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অঢেল সম্পদের তথ্য বিষয়টিকে নতুন করে সামনে এনেছে। আর এর মধ্য দিয়ে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে বিশৃঙ্খলা চরম আকার ধারণ করে। একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশের জন্য কোন ভাবেই কাম্য নয়। আমরা দেশের উন্নয়ন চাই, উন্নতি চাই, সমৃদ্ধি চাই,, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও খেলাধুলার সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ করতে চাই। আমরা রাষ্ট্রবিরোধী ঘুষ, দুর্নীতি, টাকা পাচার, ঋণখেলাপী এবং বাজার সিন্ডিকেটের মতো ঘৃণ্যকাজগুলো দেখতে চাই না। রিজার্ভ ক্ষয়ের অন্যতম প্রধান কারণ এই অর্থপাচার বা মানি লন্ডারিং, ক্যাপিটাল ফ্লাইট। বাংলাদেশকে দারুণ চিন্তায় ফেলেছে অনেক কিছু। তবে সব ছাপিয়ে এখন ডলারের বিপরীতে টাকার মানে ধস এবং রিজার্ভের পতন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তার সঙ্গে অবশ্যই মূল্যস্ফীতি সম্পর্কিত। বাংলাদেশের বর্তমান নাজুক অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেদিকে নজর দেওয়াই হবে এই মুহূর্তের সহিহ কাজ। ডুবন্ত জাহাজকে আগে উদ্ধার এবং পরে ক্যাপ্টেনকে বকাবকি করা হবে বুদ্ধিমানের দৃষ্টিভঙ্গি। ধারাবাহিকভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
ঘুষ ছাড়া সেবা নাই।’ দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ পরিবারকে ঘুষ দিয়ে সরকারের বিভিন্ন খাত থেকে সেবা নিতে হয়। ঘুষ বানিজ্য আজ ওপেন সিক্রেট হয়ে গেছে। কেউ কেউ এই ঘুষকে বলেন স্পীড মানি। কেউ বলেন কাজের শক্তি। ঘুষের কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে দুর্নীতি, অর্থনৈতিক সংকট, দূরবস্তা, অপরাধ প্রবণতা, উগ্রতা। ঘুষের কারণেই দেশের দ্রব্যমূল্যের দাম হুহু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর নাগাল টেনে ধরা যাচ্ছে না। নড়বড়ে হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক ভীত, সামাজিক ও জাতীয় উন্নয়ন কাঠামো, ব্যহত হচ্ছে সরকারে পরিকল্পনা, বাধাগ্রস্থ রাষ্ট্রের উন্নয়ন প্রক্রিয়া। ঘুষ -দুর্নীতি মানুষের মেধাশক্তি এবং মানবিকগুণাবলীর বিকাশ ধ্বংস করে দেয়। ফলে সমাজে দেখা দিচ্ছে বিশৃংঙ্খলা, হত্যা, আত্মহত্যা, খুন,ধর্ষণ, বিবাহবিচ্ছেদ, অপসংস্কৃতি, অপকৌশল, হিংসা, বিদ্বেষ, উন্মাদনা, সাম্প্রদায়িতকতার মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো। যা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। ঘুষের কারণেই দুর্নীতি করা সহজ হচ্ছে, সহজেই ঘুষ দিয়ে দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়া যাচ্ছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ জরিপে সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত খাতগুলো যথাক্রমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা (৭২.৫%), পাসপোর্ট (৬৭.৩%), বিআরটিএ (৬৫.৪%), বিচারিক সেবা (৬০.৫%), ভ‚মি সেবা (৪৪.৯%), শিক্ষা (সরকারি ও এমপিওভুক্ত) (৪২.৯%) এবং স্বাস্থ্য (৪২.৫%), বিআরটিএ খাতে (৬৩.১%) ঘুষের শিকার হয়েছে। এছাড়াও আছে গ্যাস, স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ইত্যাদি্। ২০১৭ সালের খাতওয়ারী হিসেবে প্রতিটি খানা গ্যাস খাতে গড়ে ৩৩৮০৫ টাকা (সর্বোচ্চ), বিচারিক সেবা খাতে ১৬৩১৪ টাকা, বীমা খাতে ১৪৮৬৫ টাকা, ভূমি সেবা খাতে ১১৪৫৮ টাকা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা খাতে ৬৯৭২ টাকা। দেশে ১ হাজারেরও বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের প্রতিটিতে দৈনিক গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় হয় বলে জানিয়েছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দেশের ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ সেবা খাতের ওপরে জরিপ করে দুর্নীতি ও ঘুষের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার প্রশাসন, ভূমি, কৃষি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচারিক সেবা, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং, বিআরটিএ, কর ও শুল্ক, এনজিও, পাসপোর্ট, বীমা, গ্যাস সেবা খাতে এই জরিপ করে টিআইবি। চাকরিতে ঘুষের বাজার ৫০০০ কোটির টাকার। দেশে ব্যক্তিমালিকানার বাস-মিনিবাসের সনদ ইস্যু ও নবায়নে বাসপ্রতি গড়ে ১৭ হাজার ৬১৯ টাকা ঘুষ দিতে হয়। এ খাত থেকে বছরে ঘুষ ও চাঁদাবাজি হয় অন্তত ১ হাজার ৫৯ কোটি টাকার।২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর ঘুষ লেনদেন হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা।অংশগ্রহণকারীরা ১৭টি সেবার কোন খাতে কে কী পরিমাণ দিয়েছেন তা বর্ণনা করেছেন। এতে দেখা যায়, ওই সময়কালে ১০ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেন হয়েছে।
যেকোনো দেশে রিজার্ভ অনেকটা বাড়ির ছাদে রাখা পানির ট্যাংক কিংবা চৌবাচ্চার মতো। একদিক দিয়ে পানি প্রবেশ করবে, অন্যদিক দিয়ে বের হয়ে সেই পানি প্রাপকের চাহিদা পূরণ করবে। ঠিক যে হারে পানি বের হবে, ঠিক সেই হারে পানি প্রবেশ করলে ভারসাম্য অবস্থা বজায় থাকে, নচেৎ হয় পানি উপচে পড়ে অপচয় ঘটাবে, নয়তো বাসিন্দারা পানিবঞ্চিত হবে। আবার পানি যেমন মানুষের জীবন, রিজার্ভও তেমনি একটি অর্থনীতির জীবন। ডলার তথা রিজার্ভের দ্রুত পতন ঘটছে কেন? এর আগে, বিশেষ করে গেল দুই দশকে কেন এমন পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়নি? সোজা কথায় এর উত্তর হচ্ছে, যে হারে চৌবাচ্চার পানি ব্যবহৃত হচ্ছে, তার চেয়ে কম হারে চৌবাচ্চায় পানি প্রবেশ করছে। হুন্ডির কারণে, ইংরেজিতে বলে ইনফরমাল চ্যানেল—বিদেশ থেকে পাঠানো ডলার দেশে ঢুকছে ঠিকই, তবে ব্যাংকে জমা হচ্ছে না। সুতরাং উঁচু সুদে বিদেশ থেকে ধার করে, যেনতেন শর্ত মেনে রিজার্ভের পতন ঠেকানো সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে, দীর্ঘকালের জন্য নয়। বৈদেশিক বিনিয়োগ এনে রিজার্ভ বৃদ্ধি এই মুহূর্তে কঠিন। কারণ ব্যাপক দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের ঘটনা দেশটির রেটিং নিচে নামাতে তৎপর। এই মুহূর্তে যদি সরকার কঠোর হস্তে দুর্নীতি আর অর্থপাচার রোধে সনাতনি আচার পরিবর্তন না করে, যদি পাচারকৃত অর্থ ত্বরিত ফিরিয়ে এনে উদাহরণ সৃষ্টি করা না যায়, তাহলে সমূহ বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যে সমাজে কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়, আবার কেউ কলাগাছ থেকে শুকিয়ে আঙুলের মতো হয়, সে সমাজে নৈরাজ্য অবধারিত।
সাধারণ জনগণের কাছে বোধগম্য যেসব বিষয় এ বিপদটার জানান দিচ্ছে সেগুলো হলো: দেশে প্রাথমিক শিক্ষার স্তরে ১১ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যেখানে মাতাপিতার বিত্তের নিক্তিতে সন্তানের স্কুলের ও শিক্ষার মানে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে; দেশে চার ধরনের মাধ্যমিক এবং উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে; দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পুরোপুরি বাজারীকরণ হয়ে গেছে; ব্যাংকের ঋণ সমাজের একটা ক্ষুদ্র অংশের কুক্ষিগত হয়ে যাচ্ছে এবং ঋণখেলাপি বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে; দেশের জায়গা-জমি, অ্যাপার্টমেন্ট, প্লট, ফ্ল্যাট, মানে রিয়াল এস্টেটের দাম প্রচণ্ডভাবে বেড়েছে; বিদেশে পুঁজি পাচার মারাত্মকভাবে বাড়ছে; ঢাকা নগরীতে জনসংখ্যা ২ কোটি ৩০ লাখে পৌঁছে গেছে, যেখানে আবার ৪০ শতাংশ মানুষ বস্তিবাসী;দেশে গাড়ি, বিশেষত বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি দ্রুত বেড়েছে; ৯) বিদেশে বাড়িঘর, ব্যবসাপাতি কেনার হিড়িক পড়েছে; ধনাঢ্য পরিবারগুলোর বিদেশ ভ্রমণ বাড়ছে; উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের বিদেশে পড়তে যাওয়ার প্রবাহ বাড়ছে; উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য ঘন ঘন বিদেশে যাওয়া বাড়ছে; প্রাইভেট হাসপাতাল ও বিলাসবহুল ক্লিনিক দ্রুত বাড়ছে;. প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার হিড়িক পড়েছে; দেশে ইংলিশ মিডিয়াম কিন্ডারগার্টেন, ক্যাডেট স্কুল, পাবলিক স্কুল এবং ও লেভেল/এ লেভেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার মচ্ছব চলছে; প্রধানত প্রাইভেট কারের কারণে সৃষ্ট ঢাকা ও চট্টগ্রামের ট্রাফিক জ্যাম নাগরিক জীবনকে বিপর্যস্ত করছে এবং দেশে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতি বেড়ে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে পদে পদে। দুর্নীতিলব্ধ অর্থের সিংহভাগ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
অর্থনীতির বেশির ভাগ সূচক খারাপ অবস্থায় থাকলেও রপ্তানি ও প্রবাসী আয় কিছুটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে। ডলারের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয়ে। এদিকে, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৫৭ শতাংশ, যা গত ৩ অর্থবছরে সর্বনিম্ন। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ জানুয়ারি থেকে মার্চ—এই তিন মাসেই বেড়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। গত মার্চের শেষে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। গত কয়েক দশকে দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে শিল্পকারখানার নামে, ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে, সেই ঋণ পরিশোধ করা হয়নি। অন্যদিকে শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানও আশানুরূপ হয়নি। স্বাধীনতার এক দশকের মধ্যের দেশের মধ্যেই দেশের বড় শিল্প গ্রুপগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২০০কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ৯০দশকে আদমজী বন্ধের মধ্য দিয়ে সরকারি কলকারখানাগুলো বন্ধ করা শুরু হয়। বাজেটের টাকা শীর্ষ ধনীদের একাউন্টে চলে যাওয়ার সুব্যবস্থা আছে বলেই ঋণখেলাপীর পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিদেশে টাকা পাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে অস্বাভাবিকভাবে। ফলে শিল্পায়ন বা কর্মসংস্থান আর কোনটাই হয়ে ওঠেনা এই দেশে।সোনালী, রূপালী, জনতা ব্যাংকের ৮৪ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ মানে দেশের বাজেটের ৯ ভাগের ১ ভাগ! এই টাকা নেওয়া হয়েছে শিল্পায়নের নামে। অথচ এই টাকায় উৎপাদন হয়নি, শিল্পায়ন হয়নি, গ্রামীণ অর্থনীতিতে কর্ম সৃষ্টি হয়নি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশও হয়নি। পাটশিল্প, কাগজশিল্প, তাঁতশিল্প, চিনিশিল্প ধুঁকছে; অথচ শিল্পায়নের নামে লুটপাট হয়ে গেছে জনগণের লাখো কোটি টাকা। জনগণের করের টাকায় ২৬ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হয়েছিল। অথচ অর্ধেক সক্ষমতাই অকেজো বসে থাকে। (এর মধ্যে আদানিকেই বসিয়ে বসিয়ে ‘ভাড়া’ দিতে হয় বছরে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। ১৪ বছরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা!)
ঘুষ,দুর্নীতি,খেলাপিঋণ এবং টাকা পাচার প্রতিরোধে শক্তিশালী আইন প্রণয়ন এবং তার কার্যকরী প্রয়োগ অপরিহার্য। ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপী ও টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং তার অর্জিত সম্পদ ক্রোক করা । সেই সাথে এদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারীদেরও একই আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজন প্রশাসনিক কাজে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও গতিশীল অর্থনীতির বাংলাদেশ গড়তে দেশের প্রতিটি সেক্টরকে আন্তরিক হতে হবে এবং দেশেপ্রেমের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।