সিডিএ’র ডিটি-বায়েজিদ সড়কের পাহাড় কাটা নিয়ে ১৫ সদস্যের কমিটি
গতি হলো ৯৩ লাখ টাকার। ২০০৭ সালের ১১ জুন পাহাড় ধসের পর এই নগরের বিভিন্ন বিত্তশালীদের অনুদানে একটি তহবিল গঠন হয়েছিল। কিন্তু সোনালী ব্যাংক কোর্ট হিল শাখার সেই হিসাবে জমা থাকা টাকাগুলো এতোদিন ব্যবহার করা যাচ্ছিল না নানা জটিলতার কারণে। এখন থেকে সেই টাকা উত্তোলন করে ব্যবহার করা যাবে। গতকাল শক্তিশালী পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৪তম সভায় সেই কথা জানালেন কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন।
তিনি বলেন, পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা, তাদের খাদ্য সহায়তা দেয়া কিংবা আর্থিক সহায়তা এখন থেকে এই তহবিল থেকে দেয়া যাবে। একইসাথে এই শহরের বিত্তশালীদের প্রতি অনুরোধ তারা যদি আর্থিক সহযোগিতা করে তাহলে এই তহবিল আরো বাড়ানো সম্ভব।
শক্তিশালী পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় গতানুগতিক ধারায় আলোচনায় হয়েছে। পাহাড়ের অবৈধ বসতি উচ্ছেদ, সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন, যার পাহাড় সেই সংস্থা এর দখলে নেয়া। এমন অনেক আলোচনার ভিড়ে গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ডিটি-বায়েজিদ সংযোগ সড়কের খাড়া পাহাড়গুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ করা। এবিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা ১৫ সদস্যের একটি কমিটি করে দিচ্ছি। এই কমিটি এসব খাড়া পাহাড়গুলোকে কত ডিগ্রিতে কাটলে তা আর ধসে পড়বে না সেবিষয়ে রিপোর্ট দেবে।
তিনি আরো বলেন,পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ হলেও তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অনুমোদন সাপেক্ষে এসব পাহাড় কাটার ব্যবস্থা করা হবে। অন্যথায় জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিবছর পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। কিন্তু এই অবস্থা থেকে উত্তরনের উপায় কি সেজন্য একটি সমন্বিত রিপোর্ট তৈরি করা হবে। সেই রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসে আগামীতে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।কিন্তু ২০০৭ সালের পর এপর্যন্ত অনেক নির্দেশনা ও সুপারিশ করা হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে তা মেনে চলা হয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে আশরাফ উদ্দিন বলেন, কি সুপারিশ ছিল, আর কি মানা হয়নি। তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আমরা কাজ করে দেখি কতটুকু করা যায়।
এদিকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকৃত বসতিদের উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান রাখার কথা বলা হয়েছে। বসতিদের নিজ উদ্যোগে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ভেঙে নেয়ার জন্য সময় দেয়া হয়েছে। শুক্রবার আবারো অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানানো হয়। শহরের ভেতরের পাশাপাশি উপজেলার পাহাড়গুলো থেকেও অবৈধ বসতিদের উচ্ছেদ করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে পাহাড় ধসের পর শক্তিশালী এই কমিটি গতকাল পর্যন্ত ২৪টি সভা করেছে। এছাড়া এই কমিটির অধীনে অনেকগুলো উপ কমিটি ও কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। প্রতিবছর গড়ে তিনটি সভা করে থাকে এই কমিটি।