বিদেশ মন্ত্রক থেকে চাপ দিয়ে মহাত্মা গান্ধী রূপী মহিষাসুর মূর্তিকে সরায়। এই ঘটনায় কড়া ভাষায় তীব্র নিন্দা করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিআইএম, কংগ্রেস, বিজেপি সহ বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল হিন্দু মহাসভা।
মহিষাসুর মহাত্মা গান্ধী! আর তাঁকে ত্রিশূল হাতে বধ করছেন দেবী দুর্গা! চমকাচ্ছেন? চমকাবেন না এটাই সত্যি। খাস কলকাতার এক পুজো মন্ডপে গেলেই চোখে পড়ে এই দৃশ্য। আর এই পুজো মণ্ডপ ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রশংসার ঢেউ যেমন কানা উপছে ছাপিয়ে যায়, ঠিক তেমনই বিতর্কের ঢেউও আছড়ে পড়তে সময় নেয় না। খাস কলকাতায় রুবি পার্কের অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার এই পুজো মন্ডপ ও মহাত্মা গান্ধী রূপী মহিষাসুরকে ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়েছে রাজ্যের গন্ডি ছাড়িয়ে দেশেও।
জানা গিয়েছে, অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা এই পুজোর আয়োজন করেছে। যা নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত হয়। মহাত্মা গান্ধী রূপী মহিষাসুরকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হতেই, সরাসরি বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ওই মূর্তি সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আয়োজকদের কথায়, বিদেশ মন্ত্রকের চাপেই তাঁরা মহাত্মা গান্ধী রূপী মহিষাসুরকে সরিয়েছেন। যদিও তাঁরা ‘মহাত্মা গান্ধী’ রূপী মহিষাসুর বানানোর জন্য বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নন। তাঁদের এই কাজের পিছনে যুক্তিও সাজিয়েছেন তাঁরা। অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার পশ্চিমবঙ্গ শাখার কার্যনিবাহী সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামীর কথায়, ‘আমরা গান্ধীকে সত্যিকারেই অসুর হিসেবে দেখি। তিনি সত্যিই অসুর। তাই আমরা তাঁর মতো দেখতেই অসুরের মূর্তি বানিয়েছিলাম।’
‘কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার মহাত্মা গান্ধীকে ‘প্রোমোট’ করায় আমাদের ওই মূর্তি সরিয়ে নিতে বলা হয়। আমাদের বিদেশ মন্ত্রক থেকে চাপ দেওয়া হয় সরিয়ে নেওয়ার জন্য। আমরা গান্ধীকে সব জায়গা থেকেই সরিয়ে নিতে চাই। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সহ অনান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সামনে রাখতে চাই।
‘ প্রসঙ্গত, অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার এহেন কাণ্ডকলাপে পুলিসেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তীব্র সমালোচনা করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সিপিআইএম, কংগ্রেস সহ সব রাজনৈতিক দল। এমনকি রাজ্য বিজেপি ও বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল হিন্দু মহাসভাও এর কড়া ভাষায় নিন্দা করেছে।বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল হিন্দু মহাসভার নেতা বলেন, ‘তারা যা করেছে, আমরা সেটাকে ধিক্কার জানাচ্ছি। এটা নিছক প্রচারের আলোয় আসার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা নিজেদের হিন্দ মহাসভা বলছে। কিন্তু আমরা মনে করছি, এটা দুঃখজনক।’ রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘এটা যদি হয়ে থাকে, সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি। খুবই নিম্নরুচির পরিচয় এটা।’ ওদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এটা অপবিত্রতা। এটা জাতির জনককে অসম্মান। এটা দেশের প্রতিটি নাগরকিকে অপমান।’