গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমতউল্লা খান এবং সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমের মধ্যে চলছে বাগযুদ্ধ। তারা বিভিন্ন ঘরোয়া অনুষ্ঠানে এবং দলীয় কর্মিসভায় একে অন্যকে দুর্নীতিবাজ-অযোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। কে কত উন্নয়ন করেছেন তার ফিরিস্তি তুলে ধরে বক্তব্য রাখছেন। কথার মারপ্যাঁচে একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন।
আজমতউল্লা খান শনিবার বিকালে নগরীর কোনাবাড়ীতে যৌথ কর্মিসভায় বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য অসৎ ব্যক্তিত্বের প্রভাব আর সত্ ব্যক্তিত্বের অভাব এবং অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে আমরা আমাদের টাকা থাকা সত্ত্বেও জনগণের সেবার খাতগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পারিনি। কোনাবাড়ীতে ময়লার একটি ডাম্পিং স্টেশন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ৭০০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু অব্যবস্থাপনার কারণে তা হয়নি। মার্কেটের কাছে স্কুল, কলেজ, বাসাবাড়ির কাছে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। তিনি বলেন, ১৮ বছরে আমার বিরুদ্ধে ১৮ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ কেউ আনতে পারেনি।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই নগরীর জন্য সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু অসৎ ও অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে নগরবাসীকে আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পৌঁছে দিতে পারিনি। আগামী ২৫ মে বিজয়ের মাধ্যমে মেয়র হলে দুর্নীতি আমাকে কখনো স্পর্শ করতে পারবে না। সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউল্লাহ মণ্ডলসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে একই দিন দুপুরে জাহাঙ্গীর আলম তার ছয়দানাস্থ বাসভবনে সাংবাদিকদের কাছে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আজমতউল্লা খানকে উদ্দেশ করে বলেন, তার ওপর অনেক ছায়া আছে। আর আমি হচ্ছি একা। আসেন ভোট করি, ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ হোক কে ভালো মানুষ, কে দুর্নীতিবাজ। আমি সে প্রমাণটা দিতে চাই। টঙ্গীতে আজমতউল্লা খান ১৮ বছর পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেখানে তিনি একটা ড্রেনও করেননি। একটি গাছও লাগাননি। একটি স্কুল, কলেজ ও মসজিদও করেননি। তিনি টঙ্গীবাসীর কাছে এসবের প্রমাণ দিক। আজমতউল্লা খানকে মুখোমুখি বসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে কোনো টিভি চ্যানেলে বা যে কোনো মঞ্চে এক সঙ্গে সামনাসামনি বসতে চাই। আমি লুকোচুরিভাবে কিছু বলতে চাই না। তিনি ১৮ বছরে কী করেছেন আর আমি তিন বছরে কী করেছি সেটার প্রমাণ দিতে চাই।
তিনি আরো বলেন, একটা মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে একটি চিঠি দিয়ে আমাকে এক দিনে মেয়র পদ থেকে সরানো হয়েছে। এক দিনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, এক দিনে প্যানেল মেয়র দেওয়া হয়েছে। এক দিনেই বিচারকাজ শুরু হয়েছে। যে বরাদ্দ মন্ত্রণালয় আমাকে দেয়নি সে ব্যাপারে আমাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে তারা কেউ গাজীপুর নগরীর ভোটার নয়।