পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পাঁচটি গির্জায় আগুন এবং স্থানীয় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কয়েক ডজন বাড়িতে হামলার একদিন পর তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।
পাঞ্জাব প্রদেশের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত বুধবার লাহোর থেকে প্রায় ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ফয়সালাবাদ জেলার জারানওয়ালা শহরে খ্রিস্টানদের সম্পদ ও উপাসনালয়ে হামলা চালায় শত শত বিক্ষুব্ধ লোক। হামলার একদিন পর বৃহস্পতিবার পাঞ্জাব পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল উসমান আনোয়ার বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারেও আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জারানওয়ালার ইসা নগরী (খ্রিস্টান কলোনি) এলাকার কাছে পবিত্র কোরআনের ছিঁড়ে ফেলা পৃষ্ঠা পাওয়া যায়। বিষয়গুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার সূত্রপাত করেছে।
ভাঙচুর করা পাঁচটি গির্জার মধ্যে একটি জারানওয়ালার স্যালভেশন আর্মি চার্চ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শহরের সবচেয়ে বড় গির্জার ছাদে কয়েকজন লোক গির্জার সামনের অংশে হামলা চালিয়ে ক্রস সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে।
২ লাখ ৩০ হাজার জনসংখ্যার শহরটিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং কবরস্থানকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। নজিরবিহীন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে হাজার হাজার অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর দাবি করেছেন, কুরআন অবমাননার অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে, ঘটনাটি ‘জনসাধারণের অনুভূতিকে উস্কে দেওয়ার জন্য একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।’ তিনি তার দাবির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কাকার সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন এবং হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফয়সালাবাদের জারানওয়ালা থেকে বেরিয়ে আসা দৃশ্য দেখে আমি হতবাক। যারা আইন লঙ্ঘন করবে এবং সংখ্যালঘুদের টার্গেট করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।