গোপনে রাশিয়ায় ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছেন সৌদি আরবের এক যুবরাজ। ধনকুবের ওই সৌদি যুবরাজের নাম প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালাল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চের মধ্যে রাশিয়ার তিনটি বড় জ্বালানি সংস্থায় গোপনে এই অর্থ বিনিয়োগ করেন তিনি।
মূলত ধনকুবের প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালালের নিয়ন্ত্রিত বিনিয়োগ সংস্থা কিংডম হোল্ডিং কোম্পানির মাধ্যমে বিপুল এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্যাজপ্রম, রোসনেফট এবং লুকোইল নামে রাশিয়ার তিনটি জ্বালানি সংস্থায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালালের নিয়ন্ত্রিত সংস্থা। ব্যাপক এই বিনিয়োগের মাধ্যমে সৌদি সম্ভবত সেখানে অবমূল্যায়িত সম্পদ খুঁজছিল।
মূলত গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরে অনেক পশ্চিমা দেশ রুশ জ্বালানি সংস্থা এবং তাদের নির্বাহীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে গ্যাজপ্রমের গ্লোবাল ডিপোজিটরি রসিদগুলোতে ১২৭ কোটি রিয়াল বা ৩৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেতালালের নিয়ন্ত্রিত সংস্থা। একইভাবে জ্বালানি সংস্থ রোসনেফট-এ বিনিয়োগ করা হয় ১৯৬ মিলিয়ন রিয়াল বা ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এছাড়া সৌদি এই প্রতিষ্ঠানটি গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে লুকোইলের ইউএস ডিপোজিটরি রসিদে ৪১০ মিলিয়ন রিয়াল বা ১০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে। সাম্প্রতিক বিনিয়োগের বিশদ বিররণ প্রকাশের অংশ হিসাবে গত রোববার এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট এই বিনিয়োগের কোনো কারণ উল্লেখ করেনি সংস্থাটি।
কিংডম হোল্ডিং কোম্পানির ১৬.৯ শতাংশ শেয়ার সৌদি আরবের সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের মালিকানাধীন। আর সার্বভৌম এই সম্পদ তহবিলের প্রধান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান হলেও এর বিনিয়োগের বিবরণ আগে প্রকাশ করা হয়নি।
১৯৯০ এর দশকে সিটিগ্রুপ ইনকর্পোরেটেডের মাধ্যমে সফল হওয়ার পর ব্যাপক আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালাল। এছাড়া অ্যাপল ইনকর্পোরেটেডের প্রথম দিকের বিনিয়োগকারীও ছিলেন তিনি।
এমনকি উবার টেকনোলজিস থেকে টুইটার-এর মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে কয়েক মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন সৌদি আরবের এই ধনকুবের যুবরাজ।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর সৌদি আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। এসব দেশের ওই নিরপেক্ষ অবস্থান কার্যত হতাশ করেছে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের।
কারণ ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে পশ্চিমা বহু দেশ রাশিয়াকে বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে। এক্ষেত্রে সৌদিসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখার চেষ্টায় পশ্চিমাদের কার্যত হতাশই হতে হয়েছে।