কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এফবিআই) অভিযানে উদ্ধার হওয়া নথি নিয়ে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট যে তদন্ত চালাচ্ছে তা বন্ধের দাবি নিয়ে আদালতে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা বিচারকের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করে বলেছেন, বরং এমন কোনো তৃতীয় পক্ষের আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হোক, যিনি ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের মার-এ-লাগো বাসা থেকে পাওয়া নথি নিয়ে তদন্ত করতে পারেন।
বিবিসি বলছে, গত ৮ আগস্ট ওই অভিযানে যায় এফবিআই। এ সময় তল্লাশি চালিয়ে অতি গোপনীয়সহ মোট ১১টি নথি উদ্ধার করে তারা। এই অভিযান চালানো হয়েছে গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে।
স্থানীয় সময় সোমবার আদালতে করা আবেদনে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিরপেক্ষ কোনো তৃতীয় পক্ষকে এ বিষয়ে তদন্ত করতে হবে।
নিরপেক্ষ বা তৃতীয় পক্ষের আইনজীবীকে বলা হয়ে থাকে ‘স্পেশাল মাস্টার’, সাধারণত দেশটিতে ফৌজদারি মামলায় এ ধরনের আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।
ট্রাম্পের অভিযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস বলছে, তারা বিষয়টি জানেন। এ নিয়ে কথা হবে আদালতে। আদালতের পরোয়ানা নিয়েই এফবিআই অভিযান চালিয়েছে।
ট্রাম্পের বাসায় যে পরোয়ানায় তল্লাশি, তাতে মূলত তিনটি অভিযোগ। এর মধ্যে একটি হলো গুপ্তচরবৃত্তি আইন লঙ্ঘন। এই আইনে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতি করতে পারে- এমন তথ্য প্রকাশ করাকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্টের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া নথিগুলো কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। একটি তালিকা ‘টিএস/এসসিআই’ বা অতি গোপন/সংবেদনশীল তথ্যের জন্য সংরক্ষিত। এ নথির তালিকায় ‘অতি গোপন নথির চার সেট’, ‘গোপন নথির তিনটি সেট’ এবং ‘গোপনীয়’ নথির তিনটি সেট করা হয়েছে।
এফবিআইয়ের উদ্ধার করা জিনিসের মধ্যে ২০টি বাক্স, ফটো বাইন্ডার, ‘ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট’ সম্পর্কে লেখা এবং ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক পরামর্শদাতা রজার স্টোনের পক্ষে লেখা একটি চিঠিও রয়েছে।
এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক বিবৃতিতে বলেছেন, উদ্ধার হওয়া সব কিছু ‘শ্রেণিবদ্ধ’ এবং ‘নিরাপদে’ সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, এসব জিনিস জব্দ করার কিছু নেই। রাজনৈতিক নাটক না করে, বাসায় না তল্লাশি চালিয়েও এগুলো তারা নিতে পারতেন। এফবিআইয়ের দাবি, ২০২১ সালে হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময় গোপনীয় কিছু তথ্য সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এমন ধারণাই এখন স্পষ্ট।
এর আগে ট্রাম্পের ছেলে ডনাল্ড জুনিয়র এবং ইভাঙ্কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। নানা নাটকীয়তার পর গত বছরের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা ছাড়েন ট্রাম্প। ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি আবার লড়বেন বলে আলোচনা চলছে।
এরই মধ্যে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বাসভবনে এফবিআইয়ের অভিযান ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় উঠেছে। রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতারা বিচার বিভাগ ও এফবিআইয়ের কঠোর নিন্দা করেছেন।