চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সরকারি হিসাবে এ বছর সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। আর গত অর্থবছর প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্ট’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বেশির ভাগ দেশেরই প্রবৃদ্ধির গতি আগের পূর্বাভাস থেকে কমিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে অন্যান্য অনেক দেশের মতো বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। এর ফলে শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। সরকারকে পরিস্থিতি সামাল দিতে লোডশেডিং করতে হয়েছে। এছাড়া অর্থের সাশ্রয় করতে নানা বিধি নিষেধও আরোপ করা হয়েছে।
বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এ বছর সামগ্রিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হতে পারে মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ। যা গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থা প্রকাশ করছে। ইতিমধ্যে করোনার প্রভাব এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে মন্দা কড়া নাড়ছে। এর আগে গত অক্টোবরে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল তার থেকে এবার ১ দশমিক ৩ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে পূর্বাভাস নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো পরিস্থিতি সামাল দিতে মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক করেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আগের ধারণার চেয়ে খারাপ হয়েছে। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সরবরাহ ব্যবস্থার সংকট।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ি, চলতি অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। এছাড়া পাকিস্তানে ২ শতাংশ, নেপালে ৫ দশমিক ১ শতাংশ, ভুটানে ৪ দশমিক ১ শতাংশ, মালদ্বীপে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। মূলত স্থানীয় ভোগ চাহিদা কমে যাওয়া, রপ্তানি ও প্রবাসী আয় হ্রাস এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির শ্লথগতির প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পড়ছে। এ কারণেই প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস আসছে।