বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য নিয়ে কিছুটা সুখবর দিল বিশ্বব্যাংক। টানা ছয় মাস বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম নিম্নমুখী। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী এবছর গড়ে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য কমবে ২১ শতাংশ। অবশ্য গতবছর ৪৫ শতাংশ বেড়েছিল পণ্যমূল্য। করোনা অতিমারির রেশ কাটতে না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ উসকে দেয় আন্তর্জাতিক পণ্যবাজার। শুধু জ্বালানির দামই নয়, পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। বিশ্বব্যাংকের কমোডিটি মার্কেট আউটলুক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য কমতে পারে ২১ শতাংশ। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে গড় হিসাবে স্থিতিশীল থাকবে বলেও প্রত্যাশা করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, দাম কমার সম্ভাব্য তালিকায় আছে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লার মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। তবে খাদ্যপণ্য নিয়ে খুব বেশি আশার আলো এখনো দেখা যাচ্ছে না। ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়া খাদ্যমূল্য এ বছর কিছুটা কমে আসবে। গত বছরের তুলনায় কমতে পারে মাত্র ৮ শতাংশ। সামান্য এই কমে যাওয়া খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মানুষকে খুব একটা স্বস্তি দিতে পারবে না বলেই মনে করছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় চলতি বছর জ্বালানি তেলের দাম কমতে পারে ২৬ শতাংশ। এর মধ্যে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের গড় দাম ৮৪ ডলারে নেমে আসতে পারে। ২০২২ সালের তুলনায় যা ১৬ শতাংশ কম। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম গত বছরের তুলনায় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে এ বছর। আর কয়লার দাম ৪২ শতাংশ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। কমবে সারের দামও। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ৩৭ শতাংশ কম দামে মিলতে পারে পণ্যটি। সারের দাম কমে যাওয়ার এ হার ১৯৭৪ সালের পর সর্বোচ্চ।
তবে বিশ্বব্যাংক মনে করছে, পণ্যমূল্যের সার্বিক এই দরপতন খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় থাকা বিশ্বের ৩৫ কোটি মানুষকে সামান্যই স্বস্তি দেবে। কারণ খাদ্যপণ্যের দাম একটু কমবে ঠিকই; কিন্তু তা এ বছর যে স্তরে থাকবে, সেটি হবে ১৯৭৫ সালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ইতিমধ্যে গত এক বছরে বিশ্ববাজারে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই বিশ্বে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ২০ শতাংশের মতো, যা গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ অবস্থায় খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষের জন্য বিশেষ উদ্যোগ থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।