তেপান্ন বছর হয়ে গেল আমরা নিরাপদে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে জানান দিচ্ছি আমাদের স্বাধীনতা। উদযাপন করছি স্বাধীনতা দিবস। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবময় ইতিহাসের ঘটনাগুলো দেখিনি। তবে ইতিহাস থেকে পড়েশুনে জেনেছি, জানছি। কবিতা-গল্পেও জেনেছি, ‘স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের কীভাবে হলো?
ঢাকার রাস্তায়, চট্টগ্রামের জেটিতে খালি হাতে পাকিস্তানি ট্যাংক, কামান, মেশিনগানের সামনে যারা রুখে দাঁড়িয়েছিল, তাদের রক্তেই স্বাধীনতার ঘোষণা লেখা হয়েছিল। পিলখানায় বাঙালি ইপিআর, রাজারবাগে বাঙালি পুলিশ, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে বাঙালি সিপাইদের রাইফেলের গুলির শব্দে জানান দেওয়া হয়েছিল বাঙালির বীরত্বগাথা। স্বাধীনতা দিবসে এলেই আমাদের স্মরণ করতে হয় একাত্তরের ২৫ মার্চের নির্মম ইতিহাস। কালো রাতে নিউমার্কেটে, লঞ্চঘাটে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, বস্তিতে বস্তিতে যাদের রাইফেলের গুলিতে, কামানের গোলায়, মশালের আগুনে ঘুমের মধ্যে হত্যা করা হয়েছিল।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আমাদের অহংকার, ত্যাগ, আনন্দ, উল্লাসের নাম। বাঙালি স্বজাত্যবোধের প্রথম স্বীকৃতি। এটা শুধু একটা দিন নয়, শুধু আনন্দ উদযাপন নয়। ২৫ শে মার্চ রাতে লাখো বাঙালির প্রাণের বিনিময়ে সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ার আত্মপ্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম দিন ২৬ মার্চ। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে আজকের এই দিনে মুক্তির ডাক দেওয়া হয়েছিল আমরা কি তা উপলব্ধি করতে পেরেছি, নাকি ৫২ বছর পরও আমরা সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে বন্দি হয়ে স্বাধীনতার জয়গান গাই। আজ আমাদের অর্ধশত বছরের লালিত সেই স্বাধীনতা অনুভবের জন্য সত্যিই স্বাধীন হওয়া প্রয়োজন। আর যখন স্বাধীনতার আসল সৌন্দর্যে আমরা উজ্জীবিত হব তখন রক্ষা হবে আমাদের সত্যিকারের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি, এখন প্রয়োজন শুধু নিজ স্পৃহা ও সাহসিকতা দ্বারা তা রক্ষা করার অদম্য শক্তি। আর তার জন্য তারুণ্যের জাগরণ অনেক বেশি প্রয়োজন।
আমি আশাবাদী, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আরো সমৃদ্ধি হচ্ছে এবং আরো হবে। দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে, সব নাগরিক সুশিক্ষার আওতায় এনে শিক্ষার মান এগিয়ে আসবে, বৈষম্য দূর হবে, দেশের অবকাঠামোর এক আমূল পরিবর্তন আসবে এই প্রত্যাশা। দেশের সব নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষায় এগিয়ে আসুক—এ চেতনা জাগ্রত হলে দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে আসবে। ৫৩ বছরে বাংলাদেশ এক সত্যিকারে সোনার ভূমিতে পরিণত হোক, এ প্রত্যাশায়।