সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকচক্র। আকর্ষণীয় বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা বিভাগে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেয় তারা। এরপর জামানত, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন অজুহাতে টাকা নেয়। চাকরিতে যোগদানের পর কর্মীদের ঠিকমতো বেতন দেওয়া হয় না।
আর জামানতের টাকা ফেরত না দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাকরিচ্যুত করা হয়। এই চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছেন প্রায় ৮০০ চাকরিপ্রার্থী। এমন প্রতারকচক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তদন্তকারীরা বলছেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আগে নিজেরা চাকরির জন্য গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরে নিজেরাই প্রতারকের দলে যোগ দেন। অর্থাৎ একসময়ের ভুক্তভোগীরাই এখন চালাচ্ছেন প্রতারকচক্র।
গত বুধবার রাজধানীর মিরপুরে অভিযান চালিয়ে চক্রের হোতা মাছুম বিল্লাহ (৩৩), সদস্য খাইরুল আলম রকি (২০), কামরুজ্জামান ডেনিশ (২২), মাহমুদুল হাসান (৩২), মাসুদ রানা (২৪) ও এস এম রায়হানকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প প্যাড, এসএসএফ প্রাইভেট কম্পানি লিমিটেড নামের ব্যানার, শতাধিক ভর্তি ফরম, দুই শতাধিক সিভি, দুটি চেকবই, পাঁচটি স্ট্যাম্প, দুটি অঙ্গীকারনামা, ভিজিটিং কার্ড, অর্ধশতাধিক ডিপো, নিয়োগপত্রসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে প্রতারণার শিকার হন। পরে তাঁরা নিজেরাই প্রতারণাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে গড়ে তোলেন পেশাদার সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। সুপরিকল্পিতভাবে এঁরা ধাপে ধাপে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন।
তিনি বলেন, মাছুম বিল্লাহ নিজেকে আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ের কারণে ভুক্তভোগীরা তাঁকে ভয় পেত। ভুক্তভোগীদের তিনি মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করতেন। খাইরুল আলম রকি ও কামরুজ্জামান ডেনিশ আগে সিনথীয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড নামের একটি নামসর্বস্ব কম্পানিতে একইভাবে প্রতারণার কাজ করতেন।