এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম ৫০ কেজির বস্তায় ৪০০-৭০০ টাকা আর কেজিতে ৮-১৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ইতোমধ্যেই উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম ঈশ্বরদী চালের মোকামের অর্ধেক মিল-চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে বলে চাতাল মালিক ও চালকল মালিক সমিতি জানিয়েছে।
পাশাপাশি ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভারত থেকে চাল আমদানি হচ্ছে না। এই সুযোগে হাটের ধান মজুদকারীরা ধানের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।
মোকামের চাতাল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পঞ্চাশ কেজি বস্তার মিনিকেট সপ্তাহের ব্যবধানে ৩,২০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩,৬০০ টাকা, ব্রি আটাশ ২,৮০০ টাকা থেকে ৩,৩০০ টাকা, বাসমতি ৩,৪০০ টাকা থেকে ৪,১০০ টাকা, লাল টোপা বোরো ২,৩০০ টাকা থেকে ২,৭০০ টাকা এবং গুটি স্বর্ণা ২,৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩,০০০ টাকারও উপরে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট প্রতি কেজিতে ৮ টাকা, আটাশ ১০ টাকা, বাসমতি ১৪ টাকা, লাল টোপা বোরো ৮ টাকা এবং স্বর্ণার দাম ১৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
মোকামের সম্পদ ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মনজুর আলম জানান, মোকামেও ধানের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিবহণ খরচ অনেক বেড়েছে। রাজশাহীর তানোর মোকাম থেকে আগে এক গাড়ি ধান আনতে আগে ট্রাক ভাড়া ছিল ১০ হাজার টাকা। এখন বেড়ে ১৪ হাজার হয়েছে। কিশোরগঞ্জ মোকাম থেকে ধান আনার ভাড়া ছিল ১৩-১৪ হাজার টাকা। এখন ২১ হাজার টাকা হয়েছে।
ঈশ্বরদী চালকল মালিক সমিতির সভাপতি জুলমত হায়দার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ট্রাক ভাড়া অনেক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সরকার চাল আমদানির জন্য কর প্রত্যাহার করেও কোনো লাভ হয়নি। ডলারের দাম এলোমেলো। ডলারের বর্তমান দামে চাল আমদানি করলে লোকসান হবে। তাই আমদানিকারকরা কেউ এলসি করছে না। ধানের মোকামের মজুদদাররা যখনই দেখেছে চাল আমদানি হচ্ছে না, তখনই সুযোগ বুঝে ধানের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
সভাপতি বলেন, ‘অটো মিল মালিকদের কাছে ধানের বিপুল মজুদ থাকায় তারা বেশি লাভবান হচ্ছে। বেকায়দায় পড়েছে হাসকিং মিলের মালিকরা। ঈশ্বরদীর তালিকাভুক্ত সাড়ে ৩০০ মিলের অর্ধেক ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। তালিকাভুক্ত ছাড়াও আরও তিন শতাধিক মিল-চাতাল রয়েছে।’ তাদেরও একই অবস্থা বলে তিনি জানিযেছেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিএম ইমরুল কায়েস বলেন, ‘মজুদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। ভোক্তা অধিকারকে এই বিষয়ে মনিটরিং করার জন্য বলা হয়েছে। সুযোগ পেলেই ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। আর একবার বাড়লে সেটা কমে না। তাদের অজুহাতের তো কোনো শেষ নেই।’